সেই নামের মিছিল অনেক বড়। তাদের সবাই সবার জায়গায় নিজস্ব আলো নিয়ে জ্বলজ্বল করছে। গানের কথায়, সুরে এবং কণ্ঠের মাধুর্যে তারা এখনও নিজের জায়গায় সকলের প্রিয় হয়েই আছেন। সেই সুরের মিছিলে অনন্য নাম খালিদ।
চাইম ব্যান্ডের খালিদ বলে তাকে আমরা চিনতে শুরু করি। 'নারী' অ্যালবামের সেইসব গান 'তোমাকে ভালোবেসে', 'কঙ্কালের ঢোল', 'অভিমান', 'নারী', 'ধুলো জমা কবিতা' আমাদেরকে চেনায় সুমধুর কণ্ঠের এক অনন্য কণ্ঠশিল্পী খালিদকে। খালিদ জায়গা করে নেন আদুরে গান ভালোবাসা আপামর শ্রোতাদের হৃদয়ের সিংহাসনে।
বাঙালি বরাবরই বিরহবান্ধব। বাঙালির মতো এত আনন্দ নিয়ে পৃথিবীর কোনও জাতিই বিরহ উদযাপন করতে পারে না। এই বিরহ পাগল জাতির একান্ত অনুভূতি উস্কে দেয় খালিদের একেকটা গান। সময়টা তখন মিক্সড অ্যালবামের। প্রিন্স মাহমুদ আর জুয়েল বাবুর সুর ও আয়োজনে এমন একেকটা অ্যালবাম প্রকাশ পেতে থাকে, যে অ্যালবামগুলোর প্রতিটা গানই আলাদা করে যত্নে রেখেছি আমরা সকলেই। সেইসব মিক্সড অ্যালবামের দুঃখ জাগানিয়া গানের অন্যতম কণ্ঠ হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছিলাম খালিদকেই।
তুমি আকাশের বুকে সরলতার প্রতিমা, কোনো কারণে ফেরানো গেলো না তাকে, আকাশনীলা তুমি বলো কীভাবে, আবার দেখা হবে, হয়নি যাবার বেলা, যতোটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে, এবং আরও অনেক অনেক একক গানে খালিদ যেন মধু ঢেলে দিয়েছিলেন বিরহ কাতর সমস্ত শ্রোতার কানে ও হৃদয়ে।
নব্বই দশকের পর ভাঙনের ঢেউ প্রায় সবখানেই। কেউ কেউ আলাদা পথে হাঁটলেও আগের অবস্থানে যেতে পারছিলেন না। ফিরে আসতে পারছিলেন না সেই সোনালী সময়ের মতো করে। খালিদ ঠিক ফিরে এলেন। তাকে নতুন গানে ফিরিয়ে আনলেন প্রিন্স মাহমুদ। তিনি খালিদকে দিয়ে গাওয়ালেন নতুন শতাব্দীর নতুন বিরহের এক গান।
ততদিনে ক্যাসেট আর সিডির যুগ শেষ হয়ে এফ এম রেডিও'র দখলে বাংলা গান। সবগুলো রেডিও স্টেশনের শীর্ষে জায়গা করে নেয় প্রিন্স মাহমুদের গান 'যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে'। খালিদের কণ্ঠের এই গান লুফে নেয় নতুন প্রজন্ম। সেই মিছিলে যোগ হয় এই জুটির আরও কিছু গান। যেমন 'আমায় যদি পড়ে মনে'।
যেকোন শিল্পীর বেঁচে থাকবার জন্য একটা তুমুল জনপ্রিয় গান হলেই যথেষ্ট। কিন্তু খালিদের এমন অনেকগুলো গান বাঙালির হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছে, যা কখনই ম্লান হবে না। খালিদ আমাদের সময়ের অন্যতম প্রিয় কণ্ঠ।