শেষ বারের মতো পুরান ঢাকার রৌশান ভিলা থেকে বের হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জোবায়েদ। প্রিয় ক্যাম্পাসে নয়, যাচ্ছেন মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে। ময়নাতদন্ত হবে তার।
পুরান ঢাকার অলিগলি, আরমানিটোলার নুরবক্স রোড আর গৃহ শিক্ষক হিসেবে রৌশান ভিলা তার পরিচিত হলেও প্রাণ গেল সেই চেনা আঙ্গিনাতে। ছুরিকাঘাতে রক্তক্ষরণে সিঁড়িতেই জীবনের ইতি টেনেছেন পরিসংখ্যান বিভাগের এই ছাত্র।
রোববার বিকেলে হত্যাকাণ্ডটি ঘটলেও জানাজানি হয় ঘণ্টা দুয়েক পর। খবর পেয়ে ছুটে আসেন সহপাঠী, স্বজন, শিক্ষক ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। জোবায়েদের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা। ঘেরাও করে রাখে বাড়িটি। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার করে পিবিআই। এসময় আইনশৃঙ্খলার নাজুক অবস্থার কারণে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বারবার হত্যার স্বীকার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি।
আরও পড়ুন:
এলাকাবাসী জানান, পুলিশ আসার পর চাকু উদ্ধার করলো। এরপর সিঁড়ি দিয়ে ওপরে যাওয়ার পর দেখা যায় দেহটা উল্টো হয়ে পড়ে আছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী-বাহিনীর যে নির্লিপ্ততা, পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে আমরা তা বারবার বলেছি। অতীতেও আমরা পারভেজ, সাম্যকে হারিয়েছি। বারবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভিকটিমের শিকার হচ্ছেন। এ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী-বাহিনীর পরিস্থিতি এতটা নাজুক হবে তা আমরা কখনো প্রত্যাশা করিনি।’
সিসিটিভি দেখে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জুবায়েদের ছাত্রীকে তখনই পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। এমন খবরে মধ্যরাত পর্যন্ত বংশাল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। যারা জড়িত তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
রাতেই বংশাল থানায় জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত সৈকত বাদী হয়ে মামলা করেন। এসময় ভাই হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত সৈকত বলেন, ‘আমরা পরিবারের লোকজন ৬ জন। শারীরিকভাবে একজন মারা গেলেও মানসিকভাবে আমরা সবাই মারা গেছি। এটা সরকারের নৈতিক এবং আইনগত দায়িত্ব দ্রুত খুনিদের বের করে ফাঁসির কাস্টে ঝুলানো।’
জোবায়েদের কাকা বলেন, ‘যারা ওকে খুন করেছে তাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।’
ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে সম্মত হননি। এদিকে প্রতিবাদে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল।





