পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর দুপুর ১টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের দুর্গাবাড়ি রোডের পূবালী ব্যাংক থেকে শামছুল আলম টাকা উত্তোলন করে একই এলাকার জনতা ব্যাংকে লেনদেন করেন। জনতা ব্যাংকে লেনদেন করার পর তার নিকট থাকা ৪ লাখ টাকা নিয়ে ছোট বাজার লিমা প্রিন্টিং প্রেসের সামনে আসলে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তার কাপড়ে ময়লা ছিটিয়ে দেয়।
আরেকজন তাকে বলে আপনার কাপড়ে ময়লা কিসের। তখন শামছুল আলম তার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ পাশে রেখে জামা কাপড় পরিষ্কার করে। এসময় অজ্ঞাতনামা আরেকজন ব্যক্তি টাকার ব্যাগ নিয়ে নিয়ে চলে যায়।
পরবর্তীতে শামছুল আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালী থানা পুলিশ তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলা মামলাটির তদন্ত ভার গ্রহণ করে এবং এসআই (নিরস্ত্র) বিল্লাল মিয়া তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
এদিকে পিবিআইয়ের অ্যাডিশনাল আইজিপি মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তারের সার্বিক দিকনির্দেশনায় মামলাটির রহস্য উদঘাটনে পিবিআই ময়মনসিংহ একটি বিশেষায়িত টিম গঠন করে।
বিশেষায়িত টিম ঘটনার তারিখ ও সময়কার সংগ্রহকৃত সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চোরের চেহারা শনাক্ত করে। তথ্য-প্রযুক্তি ও এআই প্রযুক্তির সহায়তায় সিসি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই ময়মনসিংহের আভিযানিক টিম গত মঙ্গলবার রাতে চুরির ঘটনায় জড়িত আসামি হান্নানকে ঢাকার চকবাজারের নাজিম উদ্দিন রোডের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত হান্নান ৪ লাখ টাকা চুরি করার বিষয়টি স্বীকার করে। পরে বুধবার হান্নানকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় নিজের অপরাধের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, ‘প্রকাশ্য দিবালোকে জনবহুল এলাকায় অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি জনাকীর্ণ এলাকায় সংঘটিত হওয়ায় প্রকৃত চোরকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা কঠিন ছিল। প্রায় দুই বছর ধরে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রকৃত চোরকে শনাক্তপূর্বক তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী হান্নান মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি চার লাখ টাকা চুরি করার বিষয়ে স্বীকার করে। হান্নান আন্তঃজেলা চোর দলের সদস্য। তার নামে পূর্বের একাধিক মামলা রয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে। ঘটনার সঙ্গে আরো কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
