‘মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্তদের আইনানুযায়ী গ্রেপ্তার, কারো অনুমতির প্রয়োজন হবে না’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম | এখন টিভি
0

জুলাই আগস্টের গণআন্দোলনে সংঘঠিত গণহত্যার মামলায় ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল, শেখ তাপস, মোহাম্মদ এ আরাফাত, নানক, হাছান মাহমুদ, নওফেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত এবং তদন্ত সংস্থা যাদের সম্পৃক্ততা পাবে- আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। এই ব্যাপারে অন্য কারো অনুমতির প্রয়োজন হবে না।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্টে পতন হয় শেখ হাসিনার। এক মাসের আন্দোলনে নিহত হয়েছে দেড় হাজার মানুষ। এসব হত্যা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। সংশোধনী আনা হয়েছে আইনেও।

আজ (বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংবাদ সংগ্রহ করা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে প্রসিকিউশন টিম। এসময় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ছাড়াও নতুন করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের কাছে নাম পাঠানো হয়েছে। এই জনের মধ্যেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিগত সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আছেন বলে জানানো হয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, 'ইন্টারপোলে পাঠানোর প্রক্রিয়াটা হচ্ছে আমাদের এখান থেকে কোর্টের আদেশ এবং আমাদের চিঠিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়। সেখানে আলাদা একটা শাখা আছে, সেখান থেকে ইন্টারপোলের সাথে কথা বলে পাঠানো হয়। আমরা যাদের বিরুদ্ধে এই রেড নোটিশ জারি করার জন্য পাঠিয়েছি তারা হচ্ছে- ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, একেএম মোজাম্মেল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, শেখ ফজলে নুর তাপস, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নসরুল হামিদ বিপু, মোহাম্মাদ আলী আরাফাত এবং তারিক আহম্মেদ সিদ্দিকী।'

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ৩৩৯টি মামলা হয়েছে। আসামি ১৪১ জনের মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ৮৭ পলাতক আর গ্রেপ্তার আছে ৫৪ জন। যাদের মধ্যে মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন। বিচার সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ট্রাইব্যুনালের আইনের আরও কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, 'জুলাই আগস্টের আন্দোলনে গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি যারা জড়িত, আড়ালে যারা নির্দেশ দিয়েছে, গুলির হিসাব, পুলিশের সব তথ্য একসঙ্গে ফাইল করে মামলা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯টি মামলা হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৫ জনকে, পলাতক আছে ৮৭ জন। এখন পর্যন্ত এক হাজার ব্যক্তির সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।'

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনানুযাী, মানতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে না। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গণহত্যার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত, নির্দেশদাতা, পরিকল্পনাকারী, অর্থ যোগানদাতাদের বিচার করার জন্য সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামোয় বিচার কাজ এগিয়ে নেয়ার কথা জানায় প্রসিকিউশন টিম।

তাজুল ইসলাম বলেন, 'ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সম্পৃক্ততা পাবে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে কোনো আইন দ্বারা আটকানো যাবে না। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত এবং আমাদের তদন্ত সংস্থা যাদের সম্পৃক্ততা পাবে- আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। এই ব্যাপারে অন্য কারো অনুমতির প্রয়োজন হবে না।'

এসএস