মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাসন থানার উপপরিদর্শক মো. আবদুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আব্দুল হালিমের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। ওই মামলায় বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এর আগে গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধে শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে জননিরাপত্তায় হুমকি ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল (বুধবার) তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) নাজির আহমেদ জানান, গ্রেপ্তার হওয়া কারখানা পরিচালক মো. আব্দুল হালিম (৪৮) চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ গাজীপুরের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটে ১৪ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টের সেনা সদস্যদের অস্থায়ী ক্যাম্পে আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর একটি টহল দল আব্দুল হালিমকে চট্টগ্রামের বাসা থেকে আটক করে। পরে তাকে গাজীপুরের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে বুধবার ( ১৩ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে আব্দুল হালিমকে বাসন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
তিনি আরো জানান, আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। টিএনজেড গ্রুপের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় শ্রমিকদের বেতনের টাকা না দিয়ে ৫ কোটি টাকা প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যদিকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা অপর একটি মামলার বাদী পুলিশ। ওই মামলায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ ও কারখানা ভাংচুরের উসকানি দিয়ে জানমাল ও সম্পদের ক্ষতি সাধন, জননিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাহেদুল ইসলাম জানান, দুটি মামলায় বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটি কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত শনিবার সকাল ৯টা হতে সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা কয়েকটি কারখানা ভাঙচুর করে। নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে টিএনজেড গ্রুপের পাঁচটিসহ আশপাশের অন্তত ৪৫ কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নিলে শ্রমিকরা ৩ দিন পর অবরোধ প্রত্যাহার করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আশপাশের অন্য কারখানাগুলো চালু হলেও গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে টিএনজেড গ্রুপের কারখানাগুলো এখনো চালু হয়নি।