অপরাধ ও আদালত
0

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে বিএনপি-জামায়াতের রিভিউ আবেদনের শুনানি ১৭ নভেম্বর

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি-জামায়াতসহ তিনটি রিভিউ আবেদনের শুনানির দিন ১৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। আজ (বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আইনজীবীরা বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নেই। অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণার জন্য সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

১৯৯১ সালে বাংলাদেশে সংবিধানের বাইরে গিয়ে প্রথমবারের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৯৬ সালে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে রাজপথে আন্দোলন করে আওয়ামী জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলো। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি।

তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ও জামাতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের চাপে বিএনপি সরকার সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংযুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়। এরপর ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের তিনটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট শেখ হাসিনার সরকার। এসময়ে ২০০৫ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল চেয়ে করা একটি আপিলের শুনানি শুরু হয়। সেই আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে রায় দেয়৷ পরে সেটি সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করে।

এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামাত জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়।

চলতি বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি-জামায়াত ও সুনাগরিকের জন্য সুজন তিনটি পৃথক রিভিউ আবেদন করেন।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে তিনটি আবেদন একসঙ্গে শুনানি হয়৷ শুরুতেই বিষয়টি গুরুত্ব বিবেচনায় বিস্তারিত শুনানির জন্য এক মাসের সময় চান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। পরে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।।

তিনি বলেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জাতীয় স্বার্থ জড়িত।'

দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ও ভোটারাধিকার প্রতিষ্ঠায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন আইনজীবীরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাঠামোগত কোনো মিল নেই। পরবর্তী কোনো নির্বাচিত সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিবে, মতামত আইনজীবীদের।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আদালতের রায়ের আলোকে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।

এসএস