গত ১১ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দেয়া মো. সাখাওয়াত হোসেন মামলা করেন। ঘটনার সময় ভারতে অবস্থান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখের নামও রয়েছে এই মামলায়।
মামলার এজাহারে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে বলা হয়, হুকুমমতে বেআইনি জনতাবদ্ধে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে সাধারণ জখম করা এবং ককটেল বিস্ফোরণ করে ত্রাস ও আতঙ্ক সৃষ্টির অপরাধে এই মামলা করা হয়েছে।
এই মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন ছাড়াও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৪ জন শিক্ষকের নাম রয়েছে। তারা সবাই আন্দোলনের সময় প্রক্টরিয়াল বডির দায়িত্বে ছিলেন।
শিক্ষকরা হলেন- সাবেক প্রক্টর ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, আইকিউএসি'র পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ, সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আবু উবাইদা রাহিদ, সহকারী প্রক্টর ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত। এর মধ্যে অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ গত ১১ জুলাই বাংলাদেশেই ছিলেন না বলে জানা গেছে।
এছাড়া মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামও রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন, সেকশন অফিসার রেজাউল ইসলাম মাজেদ, বিল্লাল হোসেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যানিং দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর মো মহসিন, আইকিউএসির অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. জসিম, হিসাব বিভাগের অফিস সহকারী কাম ডাটা প্রসেসর মো. ফখরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মিজানুর রহমান।
এছাড়া এই মামলায় বিবাদী করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীকেও। বিবাদির তালিকায় না থাকা অনেক নেতা গত দুই বছর আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
মামলার বাদী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তক্রমে আমাকে বাদী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই মামলায় আমি বাদী হয়েছি।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে সাবেক প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি মামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এই মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নিবো।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি'র সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘আমার নাম দেখে আমি বিস্মিত ও লজ্জিত। আমার ছুটি ছিলো ১১ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত। আমি দেশের বাহিরে ছিলাম তখন। কিন্তু কীভাবে নাম আসলো জানি না। আমি আমার সকল ডকুমেন্টস থানায় জমা দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘৩৬ জনের নাম এবং ৫০-৬০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। এখানে যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নামও রয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত করা হবে।’