ভৌগোলিকভাবেই নদ-নদী বেষ্টিত বরিশাল বিভাগ। এ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় শুধু বড় নদীর সংখ্যাই ৯৯টি। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য শাখা নদী ও খাল। নির্বাচনের সময় জরুরি প্রয়োজনে এসব নদী পাড়ি দিয়ে দুর্গম কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বেশ কঠিন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের দুই হাজার ৮৩৮টি ভোটকেন্দ্রের ৬৯৮টি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। সঙ্গে আছে নানা অস্থিতিশীলতায় প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাও।
বরিশাল সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে বরিশাল বিভাগের ভোটকেন্দ্রগুলোর বড় একটি অংশ ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া না হলে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে বলে আমরা মনে করছি।’
বরিশাল জেলার হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মূল ভূখণ্ড থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এছাড়া পটুয়াখালী ও বরগুনাসহ বিভিন্ন জেলার একাধিক উপজেলাও মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। এসব এলাকায় নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছানো এবং ভোটগ্রহণ শেষে তা নিরাপদে ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ মনে করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা।
বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ইলেকশনের ম্যাটেরিয়ালস পাঠানো , ইলেকশনের জনবল পাছানো এবং সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা আসলেই বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এগুলো বিবেচনা করে আমরা কেন্দ্রগুলো সাজাচ্ছি। এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদেরও সেভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি জানান, প্রার্থীদের ব্যক্তি নিরাপত্তা অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম বলেন, ‘আমাদের মূল যে লক্ষ্য, সেটি হলো আমাদের ভোটার তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। একটি বিষয় পরিষ্কার আমাদের ব্যক্তি বা কোনো জনগোষ্ঠির সঙ্গে আমাদের আনুগত্য নেই।’
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কোর কমিটি এরইমধ্যে সভা করেছে। সন্ত্রাসীদের দমনে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভোট সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানালেন বরিশালের রিটার্নিং অফিসার।
বরিশাল রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো.খায়রুল আলম সুমন বলেন, ‘রিমোট এলাকাগুলোতেও আমাদের ফোর্সগুলো এমনভাবে থাকবে, ১৫ মিনিট হলো আমার রেসপন্স টাইম। যেকোনো ঘটনা শোনামাত্র যেকোনো ফোর্স যেন যেকোনো জায়গায় যেতে পারে, এভাবে আমরা পরিকল্পনা সাজিয়েছি।’
বরিশাল জেলায় মোট ভোটার প্রায় ২২ লাখ। আর পুরো বিভাগে ভোটারের সংখ্যা ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৫ জন।
রীতি অনুসারে নির্বাচনের আগে প্রতিবারই ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের তালিকা করে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা।
তালিকা করেই কি শেষ? নাকি নেয়া হবে বিশেষ ব্যবস্থা? এবার কতটা নিরাপদ হবে ঝুঁকি পূর্ণ ভোটকেন্দ্র? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষায় থাকতে হবে ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।





