হবিগঞ্জ-কুষ্টিয়ায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও অবহেলায় মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি

হবিগঞ্জের বধ্যভূমি
হবিগঞ্জের বধ্যভূমি | ছবি: এখন টিভি
0

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও হবিগঞ্জ ও কুষ্টিয়ায় অবহেলিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ‘বধ্যভূমি’। সংরক্ষণের অভাবে উঠে গেছে রঙ, চুরি হচ্ছে যন্ত্রাংশও। একাত্তরের রক্তস্মৃতি ধরে রাখা বধ্যভূমিগুলো দ্রুত সংরক্ষণের দাবি শহিদ পরিবারের। তবে প্রশাসন বলছে, গণকবরের সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত সংরক্ষণের কাজ শুরু হবে।

লাল-সবুজ রঙের কয়েকটি পিলার আর আর মাঝখানে ছোট সাইনবোর্ড। তাতে লেখা ‘বধ্যভূমি, পবিত্রতা রক্ষা করুন।’ স্বাধীনতার এত বছর পরও অযত্নে পড়ে আছে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ বধ্যভূমি।

শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশনের পাশে বধ্যভূমি ঘেঁষে অটোরিকশা স্ট্যান্ড। বধ্যভূমির ভেতরেই পার্কিং। এছাড়া, বাহুবলের ফয়জাবাদ বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ করা হলেও, সারা বছরই থাকে অরক্ষিত।

স্থানীয়রা জানান, সরকারের কাছে তাদের দাবি এ বধ্যভূমি ঘেঁষে সুন্দর একটি সাইনবোর্ডের ব্যবস্থা করা হোক। সরকারের পক্ষ থেকে এ বধ্যভূমি ঘিরে সরকারের তরফ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক বলেন, ‘এগুলো যেন পুনরুদ্ধার করে আরও সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করা হয়। যাতে সাধারণ মানুষ এগুলো দেখে আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা তাদের স্মরণে আসে।’

জেলা প্রশাসক বলছেন, জেলায় কতগুলো গণকবর রয়েছে তার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত সংরক্ষণ করা হবে।

আরও পড়ুন:

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘এগুলো যেন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়। সেই সঙ্গে সেখানে কোনো মনুমেন্ট স্থাপন করা যায় সেই বিষয়ে যেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।’

এদিকে, কুষ্টিয়া সদরের বিত্তিপাড়া বাজারের পাশে সবচেয়ে বড় বধ্যভূমির অবস্থাও বেহাল। স্মৃতিস্তম্ভ হলেও উঠে গেছে রঙ, চুরি হচ্ছে যন্ত্রাংশ। এছাড়া দূর্বাচাঁরা এলাকার রক্তঋণ স্মৃতিসৌধটিও হারাচ্ছে অস্তিত্ব।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিনশো লোকের ক্যাম্প ছিলো এখানে। এখানে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তবে দিনের বেলা এটি মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক থাকলেও রাতে এ জায়গাটি মাদকের আড্ডা হয়ে যাচ্ছে।

কুষ্টিয়া জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘যদি এগুলো সরকারের পক্ষ থেকে করা হতো তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বুঝতে পারত এটি কবর।’

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, দ্রুতই যুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এমন কোথাও যদি থাকে আমাদের কাছে তথ্য থাকলে আমরা সরকারকে জানাবো। প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

বীর শহিদদের রক্তস্মৃতি ধরে রাখা বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে সরকার, এমনটাই প্রত্যাশা মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের।

এফএস