রাজশাহীতে অতিরিক্ত বর্জ্যের চাপ, অব্যবস্থাপনায় বাড়ছে পরিবেশ ঝুঁকি

রাজশাহীর শহর ও ময়লার স্তূপ
রাজশাহীর শহর ও ময়লার স্তূপ | ছবি: এখন টিভি
0

রাজশাহীতে দ্রুত নগরায়ন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের প্রসারে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনবসতি। ফলে বসতবাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে বর্জ্য। মাত্রাতিরিক্ত এ বর্জ্য অপসারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরীর পরিচ্ছন্নকর্মীদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে বাড়ছে পরিবেশ ঝুঁকি। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বর্জ্যকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করতে পারলে এ বর্জ্য সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। আর এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।

পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে পরিচিত রাজশাহী। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সিটি করপোরেশনের একটি প্রধান ডাম্পিং পয়েন্ট এবং ৩৫টি সেকেন্ডারি পয়েন্ট রয়েছে। এরপরও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে শহর হারাতে বসেছে তার খ্যাতি।

সিটি কর্পোরেশনের বসতবাড়ি কিংবা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা প্রথমে জমা করা হয় সেকেন্ডারি পয়েন্টে। এরপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রধান ডাম্পিং পয়েন্টে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়ার কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বর্জ্য, যা অপসারণে হিমশিম খাচ্ছেন পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।

শহরের নির্ধারিত ভাগাড় এলাকায় রাখা বর্জ্যের বেশিরভাগই কাঁচা-অপরিশোধিত অবস্থায় পড়ে থাকে, যা নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্জ্যকে সঠিকভাবে পৃথকীকরণ, সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা গেলে রাজশাহী শহর উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হতে পারে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ভালো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে বর্জ্য আলাদা আলাদাভাবে গ্রুপিং করে এগুলো সংগ্রহ করতে পারি। এগুলো রিসাইকেল এবং রিইউজ করা যেতে পারে। এগুলো রিইউজের ফলে র ম্যাটেরিয়ালের ওপর চাপ কমে যাবে।’

আরও পড়ুন:

পরিবেশবিদদের মতে, জেলার ভবিষ্যৎ উন্নয়ন টেকসই করতে হলে এখনই সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, ‘এটি আসলে অনেক বেশি অ্যালার্মিং যা মুখে বলা যাবে না। বর্জ্য স্তূপে ফেলা হচ্ছে সেখানে কোনো ডিভাইডেশন নেই। প্লাস্টিক থেকে শুরু করে সকল ধরনের বর্জ্য একসঙ্গে ফেলা হচ্ছে।’

এদিকে, আবর্জনাকে বোঝা না করে সম্পদে পরিণত করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি। প্রক্রিয়া চলমান বলে জানালেন রাসিকের কর্মকর্তা।

রাজশাহী রাসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, ‘আমাদের যে চ্যালেঞ্জ, আবর্জনার বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমরা হয়তো সুন্দর করে শহরকে ক্লিন রাখতে পারছি কিন্তু আলটিমেটলি জায়গার অভাবে কিন্তু পরে আর রাখতে পারব না। আমাদের এতো জায়গা নেই যে একটি জায়গা শেষ হয়ে গেল আবার একটি জায়গা নেব। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা জানি সরকার এ বিষয়ে আমাদের ওপর সদয় আছেন। আমরা হয়তো খুব দ্রুতই এ প্রজেক্ট পাশ করাতে পারব।’

রাজশাহী নগরীর চারশো টন বর্জ্য প্রতিদিন এ ভাগাড়ে এসে জমা হয়।

এফএস