প্রকৃতির পালাবদলে ভোরের শিশির ভেজা ঘাস আর সামান্য কুয়াশার আবরণ জানান দিচ্ছে, শিগগিরই আসছে শীত। তাই, মৌসুম শুরু না হলেও গাছ তোলা, হাঁড়ি প্রস্তুত, রস জ্বালানোর চুলা তৈরির হিড়িক যশোরের গাছিদের।
যশোরের তালবাড়িয়া গ্রামের বশির আলী। রস সংগ্রহ করে তা থেকে পাটালি গুড় তৈরির পর বিক্রি করেন। জানালেন, গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা কষ্টের কাজ হওয়ায় দিন দিন কমছে গাছির সংখ্যা। অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম এ পেশায় তেমন আগ্রহী না। বেড়েছে উপকরণের দামও।
গাছি বশির আলী বলেন, ‘অতিরিক্ত কষ্টের কারণে এ কাজ কেউ করতে চায় না। আমার সঙ্গে আরেকজন এ কাজ করে।’
আর কয়েকদিন পরেই রস সংগ্রহ করে মেঠো পথ ধরে নিরন্তর ছুটে চলবেন এখানকার গাছিরা। সংগ্রহ করা সুমিষ্ট খেজুর রস থেকে তৈরি হবে পাটালি গুড়। যা স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি যাবে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
আরও পড়ুন:
স্থানীয়রা জানান, আর কিছু দিনের মধ্যেই রস হবে। সেখান থেকে পাটালি গুড় তৈরি হবে। ৩০টি গাছে তারা ১৫ হাজার টাকার মতো লাভ করেন।
গুড় পাটালির নির্ভেজাল স্বাদ ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে নতুন করে খেজুর গাছ রোপণের পাশাপাশি গাছিদের প্রশিক্ষণ, উপকরণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া কথা বলছে কৃষি বিভাগ।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক প্রতাপ মন্ডল বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা গাছিদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকি। পাশাপাশি আমরা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গুড়ের মেলার আয়োজন করে থাকি।’
চলতি বছর জেলায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন গুড় ও ৪৯ হাজার ৫০০ লিটার রস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য একশো কোটি টাকার বেশি।





