খুলনায় সেতু পুনর্নির্মাণে স্থবিরতা, ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দৌরাত্ম্যে তীব্র যানজট

গল্লামারী সেতুতে তীব্র যানজট
গল্লামারী সেতুতে তীব্র যানজট | ছবি: এখন টিভি
0

খুলনায় যানজটে নাকাল নগরবাসী। গল্লামারী সেতু পুনর্নির্মাণের কাজে নেই অগ্রগতি। একই সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য আর সড়ক সংস্কার যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে নগরবাসীর জন্য। বিভিন্ন পয়েন্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। যানজট নিরসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও তা কাজে আসছে না।

শিল্প নগরী খুলনায় প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান গল্লামারী সেতু। নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে এ গল্লামারী সেতু হয়ে শহরে প্রবেশ করে হাজারো মানুষ। তবে এখন এ রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা মানে ভাবলেই মনে আসে যানজট আতঙ্ক!

অপরিকল্পিত সেতু ভাঙা ও নতুন সেতু নির্মাণের পর থেকে দুর্ভোগ বহুগুণ বেড়েছে এ সড়কে চলাচলকারীদের। চলতি বছর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১৯ শতাংশ।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পরে তিন-চার বছর ধরে ব্যবসায়ীরা বিপর্যস্ত। এখানে জ্যাম ছাড়াতে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগে। আগের তুলনায় তাদের বিক্রি অনেক কমে গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

আরও পড়ুন:

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় গল্লামারী সেতুর কাজে এমন ধীরগতি বলে জানায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক বলেন, ‘এখানে ঠিকাদারির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি আমাদের মালামাল বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করার চিন্তা করেছিলাম। একটি ব্রিজ সম্পূর্ণ হলে আমরা চার লেন কমপ্লিট করতে পারব। আমাদের জ্যাম অনেকটাই কমে যাবে।’

এছাড়াও বিভিন্ন রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের কাজে বাড়ছে যানজটসহ জনদুর্ভোগ। ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য কমানো ও উন্নয়ন কাজ রাতে করলে শহর যানজটমুক্ত হবে বলে মনে করছেন নগরবাসী।

নগরবাসীরা জানান, প্রতিটি মোড়ে মোড়ে যানজট লেগে থাকে। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করাও যানজটের অন্যতম কারণ। যানজটের ফলে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দেড়ি হয়।

এদিকে, ট্রাফিক ব্যবস্থার অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে পুলিশ বলছে, ইজিবাইক চালকদের প্রশিক্ষণ দিয়েও যানজট নিরসনে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

কেএমপি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ছায়রুদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘খুলনা শহরে ইজি বাইকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সঠিকভাবে নিয়ম-কানুন মানা হচ্ছে না। নিয়ম মেনে রাস্তায় চলাচল করলে যানজট হবে না। দুই লেনের রাস্তায় একটি লেন বন্ধ থাকে বিভিন্ন কাজের জন্য। এক লেন দিয়ে আসা যাওয়ার জন্য যানজট হচ্ছে।’

এদিকে, সমস্যার সমাধানে পরিকল্পিত গণপরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন ড. মো. আশিক উর রহমান বলেন, ‘যে রাস্তাটি রয়েছে সে রাস্তার মান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় এ রাস্তা দিয়ে যে যানবাহন চলাচল করতে পারত এখন সে পরিমাণে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। আমরা আশা করি এ ব্রিজটি যখন পুনর্নির্মাণ করা হবে এবং এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে তখন যানযট কিছুটা হলেও কমবে।’

এফএস