পাহাড়ি নারীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সূতা তৈরি করে তাঁতের বিশে কাপড় বুনন করেন। পরে গেরুয়া রঙ করে ধর্মীয় গুরুদের দান করেন। সমবেত প্রার্থনায় দেশ, জাতি ও বিশ্ব মানবের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে যোগ দেন পুন্যার্থীরা। গৌতম বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা প্রবর্তিত আড়াই হাজার বছরের এই ঐতিহ্য পুণ্যের আশায় পালন করছেন পাহাড়ি নারীরা।
মূলত আষাঢ়ি পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ ভিক্ষুরা একটি নির্দিষ্ট বিহারে অবস্থান করে তিন মাস বর্ষাবাস শুরু করেন। প্রবারনা পূর্ণিমা তিথিতে এ বর্ষাবাস শেষ করেন। এরপর কঠিন চীবর দানের(ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের বস্ত্র প্রদান অনুষ্ঠান) মাধ্যমে ধর্ম প্রচারে বেরিয়ে পড়েন।
এবার গেল ৬ অক্টোবর প্রবারনা পূর্ণিমা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। বাংলাদেশের প্রধান বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি রাজবন বিহারে আগামী ৩০ ও ৩১ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিকতায় সমাপ্তি ঘটবে এ আয়োজনের।
আরও পড়ুন:
কঠিন চীবর দানোৎসবে বুদ্ধপুজা, ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধ বন্দনা, পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধমুর্তি দান, ধর্মীয় দেশনা, সমবেত প্রার্থনা, কঠিনচীবর দান ও ফানুস উড়ানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্মীয় গুরু হিসেবে রাঙামাটির কাটাছড়ি রাজবন ভাবনা কেন্দ্র বনবিহারে অধ্যক্ষ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির সমবেত প্রার্থনায় দেশ, জাতি ও বিশ্ব মানবের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে প্রার্থনা করেন।
দিনব্যাপী আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সকালের পর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী বিএনপি নেতা মনি স্বপন দেওয়ান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সিনিয়র জেলা যুগ্ম জজ অ্যাডভোকেট দিপেন দেওয়ান অংশ নেন। বিকেলের পর্বে রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় ও বান্দরবানের বোমাং সার্কেল চিফ সাচিংপ্রু চৌধুরী অংশ নেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চাকমা, মারমা ও তঞ্চঙ্গ্যাসহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা অংশ নেন।





