এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুটি গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল।নিহত আমির হামজা আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে একই উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া তা’লিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র হিসেবে পড়ালেখা করছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী পানিতে একটি বস্তা ভাসতে দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয় হলে তারা আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ সময়
মরদেহ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বস্তার মধ্যে কিছু ইটও পাওয়া যায়। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমির হামজার বাবা ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।
পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়না। সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিলেন।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা নিহত আমির হামজার বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে কারা হত্যা করলো! আমার একটাই ছেলে হানজালা। আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
চান্দড়া নূরানী তালিমুল কুরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মো. আমিনউল্লাহ বলেন, ‘ছেলেটি অনেক ভদ্র ছিল। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, দ্রুত তদন্ত করে এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হোক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার সকালে আলফাডাঙ্গা থানা ওসি মো. শাহজালাল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বস্তাবন্দী মরদেহটি উদ্ধার করে সুরহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের আজ সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুতই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।





