স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে বাড়ির সামনের ডোবার পানিতে মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী থানায় খবর দেয়। পরে সাটুরিয়া থানা পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের ছেলে ঝন্টু রাজবংশী বলেন, 'রবিবার রাত একটার দিকে মায়ের ঘরে গিয়ে তাকে না পেয়ে সারারাত খোঁজাখুঁজি করি। সকালে দেখি বাড়ির সামনের ডুবায় মায়ের লাশ ভেসে আছে।'
স্থানীয় বাসিন্দা লিমন কাজী বলেন, 'লক্ষ্মী রাজবংশী প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্যারালাইজড অবস্থায় ছিলেন। তিনি হাঁটতে পারতেন না। তাই নিজে ডোবার কাছে গিয়ে পড়ে যাওয়া অসম্ভব মনে হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।'
প্রতিবেশি রানী রাজবংশীও বলেন, 'তিনি দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন, হাঁটতে পারতেন না। তাই ডোবার কাছে গিয়ে পড়া অসম্ভব।'
নিহতের বড় মেয়ে কামনা রাজবংশী বলেন, 'আমার মা দুই বছর ধরে আমার সঙ্গে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ছিল। তিন ভাইয়ের কেউ মায়ের ভরণপোষণ করত না, তাই আমি মাকে নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু আট দিন আগে বড় ভাই রঞ্জিত এসে মাকে নিয়ে যায়। এখন সেই নিয়েই কাল হলো।'
আরও পড়ুন:
এলাকার আরেক বাসিন্দা প্রণব দাস বলেন, লক্ষ্মী রাজবংশীর তিন ছেলের কেউই মায়ের দায়িত্ব নিত না। বড় মেয়ে তাকে নিজের শ্বশুরবাড়িতে রেখে যত্ন করছিল। কয়েকদিন আগে বড় ছেলে রঞ্জিত তাকে নিয়ে আসে, আর তার পরেই ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা।'
সাটুরিয়া থানার ওসি মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, 'খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।'
মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাউদ্দিন বলেন, 'আমরা ঘটনার সত্যতা যাচাই করছি। অল্প সময়ের মধ্যেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।'
স্থানীয়দের ধারণা, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। বৃদ্ধার পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা অবহেলা ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।





