ময়মনসিংহে নারী-পুরুষ সম্পর্কিত প্রচলিত ভুল ধারণা মোকাবিলায় অ্যাডভোকেসি সভা

অ্যাডভোকেসি সভায় অংশগ্রহণকারীদের একটি সেশন
অ্যাডভোকেসি সভায় অংশগ্রহণকারীদের একটি সেশন | ছবি: এখন টিভি
3

নারী-পুরুষের অধিকারে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় ময়মনসিংহে বিভাগীয় অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত সমতায় তারুণ্য প্রকল্পের আওতায় সভাটি আয়োজন করা হয়।

নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের আটটি বিভাগে যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট।

সমাজে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং নেতিবাচক জেন্ডার ধারণাগুলোকে পরিবর্তনের লক্ষ্যে যুব ও যুব-নেতৃত্বাধীন সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী ও প্রতিষ্ঠান, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের নিয়ে কাজ করছে প্রকল্পটি।

স্থানীয় অবন্তি অ্যারোমা মিলনায়তনে অ্যাডভোকেসি সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন উর রশিদ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ‍উপ-পরিচালক রাজু আহমেদ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা। এছাড়াও বিভিন্ন যুব নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও স্থানীয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা উপস্থিত ছিলেন।

সমাজে নারী-পুরুষ সম্পর্কিত প্রচলিত ভুল ধারণা তথা জেন্ডার স্টেরিওটাইপ মোকাবিলা করা যুবরা তাদের কাজের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন এই অনুষ্ঠানে।

জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হারুন উর রশিদ বলেন, ‘যুবদের নিয়ে আমাদের কাজ। স্টেরিওটাইপ ভাঙতে আমরাও তরুণদের সাথে কাজ করি। নারী ও পুরুষ পাশাপাশি কাজ করলে তবেই সমাজ এগোবে। যুবরা এ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েন বলে জানা গেছে। আমরা কিন্তু তাদের সমস্যা সমাধানের জন্যই আছি।’

জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাজনীন সুলতানা বলেন, “আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে কাজ করব। নারী-পুরুষ হিসেবে আলাদা করে ভাববো না। তাহলেই অধিকার নিশ্চিত করা যাবে এবং সমস্যাগুলো কমে আসবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইশরাত জাহান রিংকি বলেন, ‘মেয়েদের বলা হয় তারা সাইকেল চালাতে পারবেন না। আমি দেখেছি আমি সাইকেল চালিয়ে যতটা সহজে স্কুলে পৌঁছাতে পেরেছি, আমার আশেপাশের মানুষজন সেটাকে ততোটা সহজে নেননি। একজন মেয়ে যদি ৪০ মিনিটের হাঁটার দূরত্ব সাইকেলে যেতে পারে, তার জীবন অনেক সহজ হয়ে যায়। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে সমাজ সেটাকে ভালোভাবে নেয় না।’

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের বিভাগের উপ-পরিচালক বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস উপস্থিত যুবদের কাজকে চলমান রাখতে উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘আমরা নিজেদের শুদ্ধ করব। স্বপ্ন দেখব এবং সেটিকে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করব। আমাদের তরুণদের মধ্যে তথ্যের ঘাটতি কমাতে হবে। সরকারি সংস্থাগুলোর সাথে তাদের আরও যুক্ত করতে হবে। তরুণ নেতৃত্ব বিকাশে আমাদের আরও জ্ঞানভিত্তিক উদ্যোগ নিতে হবে। যুবদের আরো বেশি বেশি বই পড়তে হবে।’

বক্তারা বলেন, সামাজিক গোঁড়ামিগুলো আমাদের অগ্রসর হতে অনেক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। অনেক ফেক ঘটনা আজকাল ভাইরাল হচ্ছে। এজন্য দেখা যায় সত্যি ঘটনাগুলো অনেক সময় মিডিয়াকে আকর্ষণ করতে পারে না।

এএইচ