পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যেই গোডাউনে আনতে শুরু করেছেন জ্যাকেট। দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেছেন। তবে, পারিশ্রমিক কমে যাওয়ার অভিযোগ পোশাক শ্রমিকদের। কারখানা মালিকরা বলছেন, মৌসুম শুরু হলে বাড়বে পারিশ্রমিক।
শীত মোকাবেলায় যেসব পোশাক আমাদের দেশে প্রচলিত তার মধ্যে বড় জায়গা দখল করে আছে জ্যাকেট। দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাশাপাশি পোশাক জগতে বড় একটা অংশ জুড়ে আছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে তৈরি জ্যাকেট। প্রতি বছরই পশ্চিমাঞ্চলসহ প্রায় সারা দেশেই লাখ লাখ পিস জ্যাকেট যায় এই সৈয়দপুর থেকে।
জুলাই থেকেই কারখানাগুলোতে শুরু হয়েছে জ্যাকেট তৈরির কাজ। এখনও পুরোদমে শুরু না হলেও, যত দিন যাবে ততই ব্যস্ততা বাড়বে বলছেন কারিগররা। কোথাও ছোটদের কোথাও বড়দের জ্যাকেট তৈরি হচ্ছে। মৌসুম শুরু হলে মেয়েদের জ্যাকেট তৈরিও শুরু হবে।
এখন ছোট বড় একেকটা জ্যাকেট তৈরিতে ৫০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন কারিগররা। তবে দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পারিশ্রমিক ঠেকবে দেড়শো টাকায়। প্রতিদিন গড়েে আট থেকে দশটি জ্যাকেট তৈরি করতে পারেন তারা। ভরা মৌসুমে কাজ চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
শ্রমিকেরা জানান, প্রতি জ্যাকেট তৈরিতে ৮০ টাকা ৯০ টাকা পান। যা তাদের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে জানান শ্রমিকেরা।
কাঁচামালের সংকট, মূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে কমেছে কারখানার সংখ্যা। বছর দুয়েক আগেও শতাধিক কারখানা থাকলেও এখন টিকে আছে ৫০ থেকে ৬০টি। এত জ্যাকেটের চাহিদা পূরণে তাই বাড়তি প্রচেষ্টা কারখানা মালিকদের।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগাম জ্যাকেটগুলো তারা কিনতে আসেন এতে তাদের ব্যবসায় লাভ হয়।
বিভিন্ন কারণে কাঁচামালের সংকটে ভুগছেন কারখানা মালিকরা। ঝুট কাপড়ের দাম বেড়েছে। এমনকি চীন থেকে যেসব কাঁচামাল আসে সেগুলোর দামও বেশি পড়ছে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন খরচ।
মেহেদী গার্মেন্টস ও জ্যাকেট প্রস্ততকারক সত্ত্বাধিকারী মো. জুয়েল বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে আমরা যা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় কিনতাম এ বছর তা আমাদের দুইশো থেকে ২২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’
উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ বছর জ্যাকেটের দাম বাড়বে বলে আভাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাইকারিকে প্রতি জ্যাকেটে ৪০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রায় ১০ লাখ পিস জ্যাকেট তৈরির লক্ষ্য ব্যবসায়ীদের।
বিলাস গার্মেন্টস সত্ত্বাধিকারী মহসিন আল মামুন বলেন, ‘৪২০ টাকার ফোম ছয়শো টাকায় কিনতে হচ্ছে। চায়না প্রডাক্ট এটি ইম্পোর্ট এর ওপর নির্ভর করে।’
সৈয়দপুরের এ জ্যাকেট শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। সঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।





