এদিকে শেষ সময়ে প্রতিমা নির্মাণে প্রতিমা শিল্পীদের চোখে ঘুম নেই। মণ্ডপগুলোতে দিনের পাশাপাশি গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। পাশাপাশি পূজামণ্ডপ, তোরণ নির্মাণ ও আলোকসজ্জা নিয়েও ব্যস্ত কারিগরেরা।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে পাঁচ দিনব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বজনীন এই উৎসব। শেরপুর জেলা শহরের বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়,মণ্ডপগুলোতে দুর্গাপূজার ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ মণ্ডপে দুর্গাপ্রতিমাসহ অন্যান্য প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। পাশাপাশি কয়েকটি মণ্ডপে পোশাক পরিচ্ছদ পরিধানসহ প্রতিমা রং করার কাজও চলছে।
শেরপুর শহরের গোয়ালপট্রি এলাকার বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ী দিলীপ পোদ্দার জানান, শেষ মুহূর্তে প্রস্তুতি নিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। আশা করছি অন্যান্য বছরের মত এবারও জাঁকজমক ভাবে দুর্গোৎসব পালিত হবে।
পৌর শহরের পুরাতন গরুহাটি শিববাড়ি মহল্লার তরুণ সংঘের সাধারণ সম্পাদক শিশির পণ্ডিত বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো দুর্গাপূজা। আমরা প্রতিবছর এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকি। ইতিমধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনেরা ছুটি নিয়ে শেরপুর এসেছেন। তাই খুব ভাল ভাবে এবারের দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারব।’
আরও পড়ুন:
শেরপুর সদর উপজেলার বয়ড়া পালপাড়া গ্রামের প্রতিমা শিল্পী সনজিৎ নাগ বলেন, ‘তিনি ও তাঁর কয়েক সহযোগী মিলে বেশ কয়েকটি পূজা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ হাতে নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই সবকটি প্রতিমাতে মাটির কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্রতিমার গায়ে পোশাক পরিধান ও রং দেওয়ার কাজ চলছে।’
আরেক প্রতিমা শিল্পী সঞ্জয় নাগ জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। তাই প্রতিদিন আমাদের নির্ঘুম রাত কাটছে। রাত জেগে এভাবে পরিশ্রম করে, যখন প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়। তখন নিজের মনটা তৃপ্তিতে ভরে ওঠে। এছাড়া দেবী বোধনের আগেই প্রতিমার কাজ শেষ করে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দিতে পারব।
সদরের পালপাড়া গ্রামের নারী প্রতিমা শিল্পী যূথীমনি পাল বলেন, ‘প্রতিমা ভেদে ২০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক পাবেন। তবে বর্তমান বাজারে এই পারিশ্রমিক খুবই কম। কারণ মাটি, রং, কাপড়সহ প্রতিমা তৈরির অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়েছে। তাই নতুন প্রজন্মের আমাদের সন্তানেরা এই পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।’
শেরপুর জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি জীতেন্দ্র চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।’
শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ভূঞা জানান, এবারের দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে সব মণ্ডপে থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। এরমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।





