৬ বছরে শেষ হয়নি বরিশালের গোমা সেতু নির্মাণ, বেড়েছে ব্যয় ও মেয়াদ

বরিশালের রাঙ্গামাটি নদীর ওপর নির্মাণাধীন গোমা সেতু
বরিশালের রাঙ্গামাটি নদীর ওপর নির্মাণাধীন গোমা সেতু | ছবি: এখন টিভি
0

প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানো হলেও ৬ বছরেও সম্পন্ন হয়নি বরিশালের রাঙ্গামাটি নদীর উপর গোমা সেতুর নির্মাণ কাজ। সব গার্ডার, সবগুলো পিলার, অ্যাপ্রোচ সড়ক সম্পন্ন হলেও দুইটি স্প্যানের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৩ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরো কাজ শেষ করে দ্রুতই চালু করা হবে সেতুটি।

সেতুর গার্ডার, পিলার, অ্যাপ্রোচ সড়ক. সবই সম্পন্ন হয়েছে। তবে মাঝখানের দু’টি স্প্যান না থাকায় চলাচলের অযোগ্য সেতুটি।

বরিশাল বাকেরগঞ্জের চরাদি ও দুধল ইউনিয়নে বয়ে চলা রাঙামাটি নদী পারাপারে ২০১৮ সালে নির্মাণ শুরু হয় ২ হাজার ৫৪০ ফুট দীর্ঘ গোমা সেতু। তবে দীর্ঘ দিন পার হলেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ।

যথাযথ পরিকল্পনা, প্রকল্প তৈরি ও অনুমোদনসহ নানা কারণে দেশের বেশির ভাগ উন্নয়ন প্রকল্পই শেষ হয় না নির্দিষ্ট সময়ে। ফলে বছরের পর বছর ঝুলে থাকছে প্রকল্পের কাজ। বাড়ে মেয়াদ ও ব্যয়। এই যেমন রাঙ্গামাটি নদীর উপর নির্মাণাধীন গোমা সেতু। বাজেট বর্ধিত হলেও ৬ বছরেও সম্পন্ন হয়নি সেতুটির কাজ। যার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ৩ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে।

নদী পারাপারে প্রতি ঘণ্টায় মাত্র একটি ফেরি চলায় নদী পাড়েই কেটে যায় দীর্ঘ সময়। তাই ঝুঁকি থাকা স্বত্বেও অনেকেই নদী পার হচ্ছেন ট্রলারে। এছাড়া একটি নির্দিষ্ট সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে নদী পার হওয়া আরো কঠিন হয়ে পরে। তাই ভোগান্তি নিরসনে দ্রুত ব্রিজটি চালুর দাবি এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসীদের মধ্যে একজন বলেন, 'কোনো রোগী অসুস্থ হলে তাকে সহজে এপার থেকে ওপারে নিয়ে যাওয়া যায় না।'

আরেকজন বলেন, 'একবার ফেরি ওপারে গেলে ফিরে আসার জন্য এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ব্রিজ থাকলে ২ থেকে ৩ মিনিটে ওপারে যাওয়া যেত।'

সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের তিন উপজেলার মানুষের যাতায়াত, চিকিৎসা, বাণিজ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৪৪ ভাগ সম্পন্ন হয়। তবে সেতুর উচ্চতা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ আপত্তি তোলায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুটির বাকি অংশে স্টিল ফ্রেমের স্প্যান বসানো হবে, যার কাজ চলমান।

বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ ও জন সুরক্ষ্যা ফোরামের আহ্বায়ক শুভংকর শুভ বলেন, 'এখন নতুন করে এটা নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এটার সুফল মানুষ কবে নাগাদ ভোগ করতে পারবে, তা আমরা জানি না। আমার মনে হয় এটা খতিয়ে দেখা উচিৎ।'

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, 'নদীর অবস্থা পরিবর্র্তন হওয়ার কারণে নকশা বারবার পরিবর্তসন করতে হয়েছে। নকশা ছাড়াও জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। তবে আমরা আশা করছি আগামী মে মাসের মধ্যে আমরা এটা চালু করতে পারবো।'

প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে গোমা সেতুর কাজ শুরু হলেও সবশেষ সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি টাকা। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই যান চলাচল উন্মুক্ত করা হবে গোমা সেতুর।

এসএইচ