তদারকির অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী শতকোটি টাকার সিলেট বাস টার্মিনাল

সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল | ছবি: এখন টিভি
0

১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। টার্মিনালের ভেতরের চেয়ে রাস্তায়ই থাকে অধিকাংশ যানবাহন। ফলে ভোগান্তি রয়ে গেছে আগের মতোই। সঠিক তদারকি না থাকায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে শত কোটি টাকার স্থাপনা। যদিও সিটি করপোরেশন বলছে, সম্মিলিত ব্যবস্থাপনা না থাকায় আধুনিক টার্মিনালটির এই দশা।

২০২৩ আর ২০২৫ সালের ছবির মধ্যে অনেক ফাঁরাক। শুরুর ঝকঝকে পরিবেশ আর নেই সিলেটে নির্মিত দেশের সবচেয়ে আধুনিক এই বাস টার্মিনালের। ইতোমধ্যে অযত্ন অবহেলায় ভবনের অভ্যন্তরে থাকা দামি জিনিসপত্রগুলো নষ্ট হচ্ছে, যেন দেখার কেউ নেই।

বিশাল ওয়েটিং লাউঞ্জের চেয়ারগুলোয় জং ধরেছে অনেকটা আবার ভেঙেও পড়েছে। ভেতরের ইলেকট্রনিক্স ফিটিংসগুলোও ঝুলে আছে। কারুকার্যময় লাল ইটের দেয়ালে জমেছে ধুলো আর সর্বত্র পোস্টারের ছড়াছাড়িকতে টার্মিনালের অত্যাধুনিক অনেক জিনিসপত্র ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে অনেকটা ।

অনেক রাখঢাক করেই গত ২ বছর আগে সিলেটের এই কদমতলি বাস টার্মিনালের যাত্রা শুরু হয় কিন্তু উদ্বোধন হয়নি। বছর দু এক সময় যেত না যেতেই ইতোমধ্যে নানান সমস্যায় প্রায় অকেজোঁ হয়ে পড়েছে এই আধুনিক টার্মিনালটি। বরং ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে যে ধরনের সেবা দেয়ার কথা তা থেকে যোজন যোজন দূরত্বে রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

যাত্রীদের একজন বলেন, ‘সবগুলো চেয়ার এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। ভেঙ্গে গিয়েছে।’

আরেকজন বলেন, ‘অনেক চেয়ার ছিল সেগুলো ভেঙ্গে অনেকে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়া পরিষ্কার নেই এই জায়গা।’

যদিও সিটি করপোরেশন এর জন্য দায়ী করছে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে। বলছে তাদের গাফিলতির জন্যই টার্মিনালের এমন ব্যহাল অবস্থা ।

সিলেটের সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘সবার যে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করার কথা সে দায়িত্ব কেউ পালন করেনি।’

যদিও নতুন টার্মিনাল করার পর সকল যানবাহন টার্মিনালের ভেতরেই অবস্থান করার কথা কিন্তু বিপরীত চিত্র থাকে সবসময়।

ভেতরের চেয়ে রাস্তায়ই শত শত যানবাহন অবস্থান করায় জনসাধারণের ভোগান্তি রয়ে গেছে আগের মতোই। বাস মালিক-পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরেই তাদের যানবাহনকে রাখতে বাধ্য তারা।

পরিবহন শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘এত বিল্ডিং করার দরকার ছিল না। জায়গা বাড়িয়ে টার্মিনাল ভালোভাবে করলে পার্কিং ভালো করা যেতো।’

আর এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন বলছে জায়গার চেয়ে পরিবহনের সংখ্যা বেশি থাকায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে ঠিক, তবে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সদিচ্ছার অভাবের কারণেই টার্মিনালের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে টার্মিনালের সকল সমস্যা দুর করে সিলেটের পরিবহন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও সুসংগঠিত করতে দায়িত্বশীল হবেন সংশ্লিষ্টরা এমন প্রত্যাশা যাত্রী ও পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ।

সেজু