সড়কপথের বিকল্প হিসেবে নৌপথে কম খরচে পণ্য পরিবহনে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর। ১৫৫ কোটি টাকায় নির্মিত এ টার্মিনাল ২০১৩ সালে চালু হয়। তবে অতিরিক্ত খরচ, জাহাজের শিডিউল ঠিক না থাকাসহ নানা কারণে টার্মিনাল ব্যবহারে ক্রমশ আগ্রহ হারান ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ২০২৩ সালে জুলাইয়ে পানগাঁওগামী একটি কনটেইনার জাহাজ ডুবি এবং পণ্য খালাসে কাস্টমসর জটিলতায় বিমুখ হন ব্যবসায়ী ও শিপিং এজেন্টরা।
এ প্রেক্ষাপটে গত নভেম্বরে এক চুক্তির মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান মেডলগকে ২২ বছরের জন্য পানগাঁও টার্মিনাল পরিচালনার ভার দেয় বন্দর। জানুয়ারির প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে টার্মিনালটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বুঝে নেবে বিদেশ অপারেটর।
বন্দর বলছে, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের পাশাপাশি এই রুটে পণ্য পরিবহনে বিশেষ ধরনের জাহাজ আনবে মেডলগ। আগে লোকসান থাকলেও আগামীতে এ টার্মিনালটি লাভজনক হবে, এমন প্রত্যাশা কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘পানগাঁও টার্মিনালকে আমরা ভাইব্রেন্ট করতে উদ্যোগ নিচ্ছিলাম। আমরা দরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগ দিয়েছি। এ উদ্যোগ গ্রহণ করলে সবমিলিয়ে পানগাঁও টার্মিনাল বিশাল লাভের মুখ দেখবে। দেশের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা রাখবে।’
পানগাঁও বিদেশি অপারেটরকে দেয়ার উদ্যোগে স্বাগত জানালেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে এ টার্মিনাল দিয়ে পণ্য আনা নেয়ায় খরচ ও সময় দুটোই বেশি লাগে। সেই সঙ্গে অধিকাংশ পণ্য কায়িক পরীক্ষার কারণে খালাসে দেরি হয়। তাই এ টার্মিনালকে পুরোদমে সচল করতে হলে জাহাজ বাড়ানোর পাশাপাশি কমাতে হবে খরচ ও জটিলতা।
বাংলাদেশ আয়রন এন্ড স্টিল ইমপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়রর সহ-সভাপতি আমির হোসেন নূরানি বলেন, ‘যদি নতুন কোনো বিদেশি অপারেটর আসলে যদি পরিবর্তন হয় আমরা এ আশাতেই আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না জাহাজ ভাড়া কমবে, জাহাজের সংখ্যা বাড়বে ততোক্ষণ পর্যন্ত বন্দর সচল হবে না।’
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘আমাদের যে পণ্য পরিবহণ বায়ারদের ওপর নির্ভর করে। আমার বিশ্বাস তাদের পক্ষে চালু করা সম্ভব।’
অভ্যন্তরীণ এ নৌ টার্মিনালে মোট চার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে মেডলগ। চুক্তির আওতায় প্রতি একক কনটেইনার থেকে বন্দর কত মাশুল পাবে এবং বছরে কত ফি পাবে সেটি প্রকাশ করেনি।





