গেল ১৮ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোন এক মহল হামলা চালায় বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহাসিক ধারক ছায়ানট ভবনে। ভেঙ্গে ফেলা হয় শিল্পীদের স্মৃতিজড়িত হারমোনিয়াম, তবলা, বেহালাসহ অসংখ্য বাদ্যযন্ত্র, তছনছ করা হয় একাধিক কক্ষ। শেষমেশ দেয়া হয় আগুন।
যে আগুন কেবল বাদ্যযন্ত্রে নয় ছড়িয়ে পড়ে শিল্পীদের হৃদয়ে। চোখে-মুখে নীরব ক্ষোভ আর টগবগে প্রতিবাদে মঙ্গলবার আবারও তারা একত্রিত হন ছায়ানট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে। সংহতি সমাবেশে একাত্মতা জানিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান সর্বস্তরের সংস্কৃতিপ্রেমী সাধারণ নাগরিক।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জন্মাবধি ছায়ানট রাজনীতি বা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। ছায়ানট বিগত ষাট বছর ধরে সঙ্গীত ও সংস্কৃতির অনুশীলন এবং তার প্রসারের মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে জাগ্রত করতে কাজ করে আসছে; একটি সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়ে তুলতে সচেষ্ট রয়েছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা মেনে নিতে পারছেন না কেউই।
আরও পড়ুন:
প্রতিবাদে অংশ নেয়াদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এ প্রতিবাদটি আজকে ভীষণরকম জরুরি ছিল। কারণ আমাদের চারপাশে যা কিছু ঘটছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনার এবং কষ্টের’
অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি চর্চার পথে কোনো বাধা আমরা মানি না। আমরা আমাদের কাজ করে যাবো।’
এসময় বোবা যন্ত্র ও সংস্কৃতির উপর হামলার কথা বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন অনেকেই।
প্রতিবাদে অংশ নেয়াদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমরা মনে করি যে, এটা প্রাণের কেন্দ্র আমাদের। অনেকে ধারণ করে ছায়ানটকে। না হলে তো এত শিক্ষার্থী হতো না।’
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানসহ ছোট বড় সব আন্দোলনকেই বেগবান করেছে এই গান। আজ গান এবং শিল্পীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। প্রতিবাদ সমাবেশে তাই গানে গানেই সবার কাছেই নিরাপত্তার উদাত্ত আহ্বান ছায়ানটের।





