নভেম্বরে আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশ নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়বিরোধী সহিংসতা তীব্র হয়ে ওঠে। যা মোকাবিলায় মার্কিন সেনা মোতায়েন এবং বিমান হামলার হুমকি দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরও সহিংস উত্তেজনার মধ্যেই গতে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে অপহরণ আতঙ্ক।
নাইজেরিয়ার খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনে তথ্য বলছে, উত্তর-মধ্য নাইজার রাজ্যের সেন্ট মেরি'স স্কুলের ৩১৫ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে অপহরণ করা হয়েছে।
এরপর উদ্ধার তৎপরতার শুরুর দাবি করে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু প্রশাসন। ২২ নভেম্বর খবর আসে, অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে পরিবারের কাছে ফিরতে সক্ষম হয়েছে ৫০ শিক্ষার্থী। পরে ৭ ডিসেম্বর আরও ১০০ জনকে মুক্ত করার খবর দেয় প্রেসিডেন্ট কার্যালয়।
অপহরণকারীদের হাতেই থেকে যায় আরও ১৬৫ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। এক মাসের মাথায় নাইজেরিয়ার স্থানীয় সময় রোববার তাদের মধ্যে আরও ১৩০জনকে উদ্ধারের খবর দিলো দেশটির সরকার।
হিসেব অনুযায়ী এখনও স্কুলটির অন্তত ৩৫ জন শিক্ষার্থী অপহরণকারীদের কব্জায়। এছাড়াও কেব্বি রাজ্যের একটি স্কুল থেকে অপহরণ করা ২৫ ছাত্রী এবং কওয়ারা রাজ্যের একটি গির্জার ৩৮ উপাসক কি অবস্থায় আছেন তারও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
এদিকে অপহরণের পর সরকার দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের কথা বললেও, কীভাবে তাদের উদ্ধার নিশ্চিত করেছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য সামনে আনেনি। মুক্তিপণ হিসেবে কোনো অর্থ লেগেছে কি-না তাও জানা যায়নি। এমনকি কোন চক্র এভাবে অপহরণ করছে তাও নিশ্চিত করেনি সরকার।
শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের সময় কোনো অপহরণকারীকে আটক করা সম্ভব হয়েছে কি-না পাওয়া যায়নি সে তথ্যও। যা রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এতে করে এখনও গণ অপহরণ আতঙ্ক কাটেনি দেশটিতে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও রয়ছে উদ্বেগ।
একজন বলেন, ‘আমরা আশা করি অপহরণ করা সব শিক্ষার্থীকে জীবিত উদ্ধার সম্ভব হবে। তবে অপহরণে ঘটনায় এখন সবাই আতঙ্কে সময় পার করছে। বিশেষ করে যাদের সন্তান রয়েছে।’
আরেকজন বলেন, ‘সরকার অপহরণকারীদের সম্পর্কে কোনো তথ্য সামনে আনছে না। যার কারণে সার্বিকভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও আমরা দুশ্চিন্তায়।’
মুক্তিপণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য নাইজেরিয়ায় অপহরণের ঘটনা এবারই নতুন নয়। এর আগে ২০১৪ সালে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর চিবোকের বোর্ডিং স্কুল থেকে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছিল বোকো হারাম সশস্ত্র গোষ্ঠী। এছাড়াও জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দেড় মিলিয়ন ডলারের বেশি মুক্তিপণ আদায় করেছে অপহরণকারী বিভিন্ন চক্র।





