গণঅভ্যুত্থানের এক বছর না পেরোতেই ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা জুলাই আন্দোলনকে নানাভাবে হাল্কা করছেন বলে অভিযোগ রাকসু জিএস সালাউদ্দিন আম্মারের। তার অভিযোগ, আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা জুলাই যোদ্ধাদের ক্লাসে উপস্থিতি, মার্কস কম দেয়াসহ নানাভাবে হেনস্তা করছেন।
রাকসু জিএস সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘প্রতিটি আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ক্লাসে। এখন বলা হচ্ছে ক্লাস নিলে কী হবে, ক্লাস নিলে যা হবে একটি ক্লাসে ৯০ জন বা ১০০ জন ক্লাস করে যদি তাদের জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ব্রেইনওয়াশ করা হয় বা হাদি ভাইয়ের মৃত্যুকে হালকাভাবে প্রেজেন্ট করা হয়; তাহলে সেই দেড়শজন আলাপে আলাপে দেড়হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।’
এমন অভিযোগের মধ্যেই গেল ১৭ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়া ছয় আওয়ামীপন্থি ডিনের মেয়াদ বাড়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে রোববারের মধ্যে ওই ছয় ডিনকে অপসারণে আল্টিমেটাম দেন জিএস আম্মার।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার সকালে ছয় ডিনের পদত্যাগপত্র নিজেই লিখে আনেন সালাউদ্দিন আম্মার। পরে প্রত্যেক ডিনকে ফোন করে তাদের পদত্যাগপত্র সম্পর্কে জানান তিনি। এসময় ডিনরা আর দায়িত্বে থাকবেন না বলে উপাচার্যকে জানান তারা।
আরও পড়ুন:
এরপরই ক্যাম্পাসের চতুর্থ বিজ্ঞান ভবন, সৈয়দ ইসলাম হোসেন সিরাজি ভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরে যান সালাউদ্দিন আম্মার। পরে শিক্ষার্থীদের একাংশকে নিয়ে ডিনদের অপসারণের দাবিতে ডিন কমপ্লেক্স, রেজিস্ট্রার, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কক্ষে তালা দেন তিনি।
এসময় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে উপ-উপচার্য, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা করণীয় নিয়ে উপাচার্যের সভাকক্ষে বৈঠকে বসে। এতে সিদ্ধান্ত হয় সন্ধ্যায় ছয় ডিনকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসবেন উপাচার্য।
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় একে একে গাড়িতে করে উপাচার্যের বাসভবনে আসেন ছয় ডিন। বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অর্পিত অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে লিখিত দিয়েছেন তারা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, ‘ছয়জনই এসেছিলেন এবং তাদের সঙ্গে একটি ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা নিজেরাই মনে করছিলেন বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে অপারগতা প্রকাশ করছিলেন।’
২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ডিন নির্বাচনে ১২টি অনুষদের মধ্যে ৬টিতে জয়লাভ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ। জয়ী অনুষদগুলো ছিলো আইন, বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং ভূ-বিজ্ঞান।





