গাজায় কাগজে-কলমে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এর পরিপূর্ণ সুফল পাচ্ছে না যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা। অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর কয়েক দফা ভারি বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে গাজাবাসী। এছাড়া, শর্তে রাজি হলেও, গাজায় পূর্ণ মানবনিক সহায়তা সামগ্রী প্রবেশে এখনও অনুমতি দেয়নি নেতানিয়াহু প্রশাসন। পাশাপাশি, প্রায় দুই বছরের ইসরাইলি আগ্রাসনের ক্ষতচিহ্ন ও ভেঙে পড়া পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে সঙ্গী করে তাঁবুতে মানবেতর জীবন কাটচ্ছে গাজার নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি শর্ত মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিলেও নানা অজুহাতে এটি ভঙ্গ করে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। রোববার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ড্রোন হামলা চালায় আইডিএফ। এতে হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এছাড়া, রাফাহ শহরেও হামলা অব্যাহত রেখেছে তেল-আবিব।
অন্যদিকে, খোদ যুক্তরাষ্ট্রের বারণ সত্ত্বেও, অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুবাস অঞ্চলে বুধবার থেকে অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সৈন্যরা। এতে অঞ্চলটি জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন:
গাজার ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি নিয়ে এরই মধ্যে সরব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। শনিবার লন্ডনের রাস্তায় ফিলিস্তিনের পতাকা ও যুদ্ধবিরতি নানা প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নামে প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনপন্থি। এসময় তারা গাজাজুড়ে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে গানের প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক প্ল্যার্টফর্ম ইউরোভিশন থেকে ইসরাইলকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
এরই মধ্যে ইসরাইলকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দিতে সম্মত হয়েছে নেদারল্যান্ডস, স্লোভেনিয়া, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন।
শুধু লন্ডন নয়, গাজাবাসীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে ইতালির রোমেও। শনিবার গাজা অভিমুখী সুমুদ ফ্লোটিলা বহরে থাকা সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ ছাড়াও বিক্ষোভে অংশ নেয় অসংখ্য মানুষ।
এসময়, বিক্ষোভকারীরা মেলোনি প্রশাসনের ২০২৬ সালের বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেন। কেননা সরকারের বিরুদ্ধে বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়নের মতো খাতগুলো অপেক্ষা প্রতিরক্ষা খাতকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার অভিযোগ তুলেন বিক্ষোভকারীরা। অনেকে একে যুদ্ধের বাজেট বলেও অভিহিত করেন।
সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, ‘ইসরাইল যখন ফিলিস্তিনজুড়ে গণহত্যা, পরিবেশ ধ্বংসের মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে; তখন দেশটিকে আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সহায়তা দিয়ে আসছে ইতালি। তাই আমাদের উচিত রাস্তায় নেমে আসা, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।’
বক্তব্যে থুনবার্গ মেলোনি সরকারকে স্বৈরাচারী বলেও অভিহিত করেন।
আজ (রোববার, ৩০ নভেম্বর) তুরস্কের পর লেবানন সফরে যাচ্ছেন রোমান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ লিও ফ্রান্সিস। সম্প্রতি দেশটিতে হিজবুল্লাহ বিরুদ্ধে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। রয়টার্স জানায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি বার্তা নিয়ে যাবেন পোপ লিও।





