গেলো বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়।
এসব দুর্নীতির মধ্যে ঢাকার অদুরে পূর্বাচলে কূটনৈতিক এলাকায় ক্ষমতা অপব্যবহার করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে তিনটি প্লট নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। সঙ্গে আসামি করা হয় সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরিফ আহমেদসহ ১২ জনকে।
চলতি বছরের ৩১ জুলাই ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে। মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়। শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতে বলেন, শেখ হাসিনা ও তার পরিবার বিধি বহির্ভূতভাবে তথ্য গোপন করে সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়েছে। যা দুদকের আইনে ক্ষমতার অপব্যবহার । গণপূর্ত ও রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তারা যোগসাজশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এই প্লট বরাদ্দ দিয়েছে। প্লট দুর্নীতির সব অভিযোগ আদালতে প্রমাণে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি দুদকের।
আরও পড়ুন:
দুদকের আইনজীবী খান মো. মইনুল হাসান বলেন, ‘রাজউক, গণপূর্ত কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বিধিবহির্ভূতভাবে তারা এ প্লটগুলো দুই পরিবারের কাছে বরাদ্দ দিয়েছেন। স্পেশাল প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাজউকের যে সার্বজনীন একটা বিধি ছিলো অর্থাৎ হলফনামা। এ হলফনামা দিতে হয় একারণে যে দরখাস্ত করছে তার নিজের অথবা তার স্ত্রী, স্বামী বা তার পৌষ্যদের রাজউকের এলাকাধীন কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট তাদের নেই। এই ছয়জনের প্রত্যেকেই হলফনামা দিয়েছেন রাজউকের আওতাধীন আশেপাশে তাদের কোনো প্লট বা ফ্ল্যাট নেই।’
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন চান দুদকের আইনজীবী।
খান মো. মইনুল হাসান বলেন, ‘রাজউকের প্রধান শর্তই তারা ভঙ্গ করেছেন। শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার পরিবারের সম্পদ আছে রাজউকের আওতাধীন। প্লট বরাদ্দ করে তারা আইন অমান্য করেছেন। আইন অমান্য করায় আমরা শেখ হাসিনার মামলায় ২৯ জন সাক্ষ্য প্রমাণ করেছি এবং আমাদের যে অভিযোগ ছিলো তাদের বিরুদ্ধে তা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
এই মামলায় একজন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। বাকি সব আসামি পলাতক। প্লট দুর্নীতি নিয়ে ছয়টি মামলা করেছে দুদক। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার তিনটি আর ১ ডিসেম্বর আরও ৩টি মামলার রায় দেয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই মামলায় আসামি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ, ছেলে রেদোয়ান সিদ্দিক ববি।





