খবরের শিরোনামে সুদান নামটি আসলেই, চোখে ভাসে গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত দেশটির ভয়াবহ মানবিক সংকট। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে প্রায় তিন বছর ধরে সংঘাতে লিপ্ত সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস-আরএসফের সদস্যরা। আর এর খেসারত দিচ্ছে দেশটির পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ। সংঘাতে প্রাণহানির সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এছাড়া দেশটিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৯৫ লাখ।
কিন্তু আয়তনে আফ্রিকা মহাদেশের এই তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রটি শুধু সংঘাত- হানাহানিতে নয়, স্বর্ণ, তেল ও কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য বিশ্বে বিখ্যাত। নীলনদ দেশটির অর্থনীতিকে করেছে আরও বেশি সমৃদ্ধ। যা দেশটির অভ্যন্তরীণ পক্ষগুলোর সংঘাতে জড়ানোর মূল কারণ। একারণে অনেকেরই অভিযোগ, বিশ্ব মোড়ল দেশগুলো কলকাঠি নাড়ছে সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে। আর এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম। আরএসএফকে মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে দেশটির বিরুদ্ধে।
আল-জাজিরার খবর, সুদানের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা দুবাই। ২০২৩ সালে সুদান থেকে ১ বিলিয়নেরও বেশি পণ্য কিনে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যার বেশিরভাগই স্বর্ণ।
আরও পড়ুন:
সুদানের মধ্য ও দক্ষিণ পশ্চিমের স্বর্ণ খনিগুলোর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে আরএসএফ। তবে দেশটির পূর্বের স্বর্ণ খনিগুলোর নিয়ন্ত্রণ এখনও ধরে রেখেছে সুদানের সেনাবাহিনী। গৃহযুদ্ধের মধ্যেও উৎপাদন বেড়েছে মূল্যবান সোনালি ধাতুর। গত বছরে দেশটির বার্ষিক স্বর্ণ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬৪ টন, যা ২০২২ এ ছিলো প্রায় ৪১ টন।
স্বর্ণ ছাড়াও সুদানের বৈদেশিক আয়ের আরেকটি বড় উৎস তেল। অবিভক্ত সুদানে ২০০১ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তেলের দৈনিক উৎপাদন ছিল দুই থেকে পাঁচ লাখ ব্যারেল। কিন্তু ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদান আলাদা হয়ে যাওয়ায় মোট মজুতের প্রায় ৭৫ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ হারায় সুদান।
এরপরও দেশটিতে থাকা তেলক্ষেত্রগুলোর বেশিরভাগেরই নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে আরএসএফ। তবে জানুয়ারিতে দেশটির সবচেয়ে বড় খার্তুম শোধনাগার দখল করে সুদানের সেনাবাহিনী।
নীল নদের কারণে সুদানের কৃষিখাতও বেশ সমৃদ্ধ। সুদানের মোট ভূমি অর্ধেকজুড়ে গো-চারণভূমি। এটিও ভাগাভাগি করে রেখেছে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ সদস্যরা।
২০২৩ সালে সুদানের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিলো পাঁচ বিলিয়নেরও বেশি ছিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে অপরিশোধিত তেল থেকে। এছাড়া তেল বীজ রপ্তানির জন্যও বিশেষ খ্যাতি রয়েছে দেশটির।





