সরে যাচ্ছে হিমালয়ের টেকটোনিক প্লেট; বড় ভূমিকম্পের শঙ্কায় বাংলাদেশ

হিমালয়ের টেকটোনিক প্লেট
হিমালয়ের টেকটোনিক প্লেট | ছবি: সংগৃহীত
1

ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে হিমালয়ের নিচে থাকা টেকটোনিক প্লেট-টাইমস অব ইন্ডিয়ার এমন প্রতিবেদনের একদিন পর ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কবলে পড়লো বাংলাদেশ। এ আশঙ্কা সত্য হলে অদূর ভবিষ্যতে আরও তীব্র ভূমিকম্পের কবলে পড়তে পারে বাংলাদেশ। কারণ, তিনটি আলাদা প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় ভূতাত্ত্বিকভাবে জটিল এক অঞ্চলে অবস্থান বাংলাদেশের। তবে পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আরও তথ্য ও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

কোথাও কোনো ভূমিকম্প আঘাত হানলে সবার আগে আলোচনায় আসে টেকটোনিক প্লেট। এটি মূলত পৃথিবীর ভূত্বকের কঠিন স্তর যা বিভিন্ন খণ্ডে ভাগ করা এবং ভাসমান অবস্থায় থাকে। এ প্লেটগুলো নড়াচড়া করলে এবং একে অপরের সাথে মিলিত হলে সৃষ্টি হয় পর্বতমালা ও মালভূমি। ঘটে ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা। পৃথিবীতে এরকম বড় প্লেটের সংখ্যা ৭, আছে অসংখ্য ছোট আকারের সাব-প্লেট।

পৃথিবীর ৫টি দেশের সীমানা ঘিরে আছে হিমালয় পর্বতমালা। বিজ্ঞানীরা বলেন, ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের সংঘর্ষেই উত্থান ঘটেছে হিমালয়ের। হিমালয়-তিব্বত পৃথিবীর সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে পরিণত হওয়ার একটি বড় কারণও দুটি বৃহৎ প্লেটের সংঘর্ষ, প্লেটের ভাঙার প্রবণতা।

গেল বৃহস্পতিবার এসব নিয়েই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। যেখানে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের নিচের অংশটি ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যাচ্ছে এবং ঢুকে যাচ্ছে পৃথিবীর অভ্যন্তরের একটি স্তরে, যাকে বলা হয় ম্যান্টল। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় প্লেট ফেটে যাওয়া ভূত্বকে বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন পরই ৫.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। রাজধানীর একেবারে কাছে উৎপত্তি হওয়া এই কম্পনের জেরে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে টেকটোনিক প্লেট প্রসঙ্গ। বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় ভূ-তাত্ত্বিক অঞ্চলের একটি হিসেবে বিবেচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারত, ইউরেশিয়া ও বার্মা- মোট ৩টি দৈত্যাকৃতির টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ। এখন ভারতীয় প্লেট যদি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ইউরেশীয় প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায় তাহলে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে মারাত্মক ভূমিকম্প ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।

গেল মার্চে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে পরপর ৬টি ভূকম্পনের পরই এ নিয়ে নানা ধরণের সংবাদ ও গবেষণা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। তবে ভারতের প্লেট সরে গেলে পার্শ্ববর্তী এলাকায় কী প্রভাব পড়বে তা বিস্তারিতভাবে জানতে প্রয়োজন আরও তথ্য ও গবেষণার।

এএইচ