ধানের ডগায় শিশির বিন্দু. কুয়াশার চাদরে মোড়ানো মেঠোপথ কিংবা পিঠা-পুলির বিকিকিনি। যা দেখলেই মনে হতে পারে হয়তো শীত এসে গেছে। কিন্তু না। ভোর, দিন আর রাতের তাপমাত্রায় ফারাক বিস্তর। ভোরে শীতল হলেও বেলা বাড়তেই প্রখর রোদে হাঁসফাঁস চারপাশে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভাটির জনপদ ফেনীতে শীতের চিরচেনা রূপ এখন অনেকটাই অচেনা। শীতের অনুষঙ্গ সব-ই আছে, কিন্তু শীত আছে কি, আগের মত?
সাধারণ জনগণরা জানান, ‘আগে শীত ঘড়ির কাটার মতো আসতো। এখন শীত আগের মতো অনুভূত হয় না। দিনের বেলা এখন খুব গরম। ফলে ছোট বাচ্চা থেকে সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়বে।’
সকালে কুয়াশা আর দিন-দুপুরে গরমের এ বৈরিতায় সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ভুগছেন সর্দি, জ্বর, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে।
আরও পড়ুন:
হাসপাতালে রোগীরা জানান, ‘সকালে কুয়াশা পড়ে। রাতে গরম পড়ে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সকলে।’
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, গত কয়েক দশকে ফেনীর জীববৈচিত্র্যে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যেমন রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি তাপমাত্রাও ছুঁয়েছে সর্বোচ্চ সীমা। শীত যতদিন থাকার কথা তা না থেকে হঠাৎ করেই নেমে আসে শৈত্যপ্রবাহ- আবার তেমনই হারিয়েও যায় দ্রুত।
ফেনী আবহাওয়া অফিস সিনিয়র অবজার্ভার মো.মজিবুর রহমান বলেন, ‘ফেনিতে দেখা যায় দিনে গরম আবার সকালবেলা কুয়াশা। আমরা ঠিকভাবে শীত অনুভব করতে পারছি না। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর দেরিতে শীত আসছে। শীতের প্রভাব বাড়বে ধীরে ধরে তবে এর মেয়াদকাল কমে যাবে।’
শুধু শরীরে কিংবা মনে নয়-শীত কিন্তু চুপি চুপি ঢুকে পড়েছিল বাংলা সাহিত্যেও। গান-কবিতার পাতা উলটালেই দেখা মিলে বছরের এ পঞ্চম ঋতু, পৌষ আর মাঘ মাসের শীত। সময় বদলেছে, বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনধারা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রকৃতিকে তার নিজের ছন্দে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন পরিবেশ সচেতনতার।





