বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে আপত্তি নেই; শেখ হাসিনা ন্যায়বিচার পাবেন: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী

শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন
শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন | ছবি: সংগৃহীত
0

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা হবে। রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং দেশের সব গণমাধ্যম। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সেও রায় দেখানো হবে। পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আজ (সোমবার, ১৭ নভেম্বর) সকালে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত শেখ হাসিনার আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা ন্যায়বিচার পাবেন, বিচারের স্বচ্ছতা নিয়েও কোনো আপত্তি নেই।’ তিনি জানান, বিচারকালীন পুরো প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ হয়নি।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার বিচারকাজ সরাসরি প্রচারের জন্য সকালেই ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে বিটিভির বিশেষ টিম। সকাল ৮টার পর লাইভ সম্প্রচারের দল ট্রাইব্যুনাল গেটে অবস্থান নেয়। আদালতের মূল ফটকের বাইরে এরইমধ্যে জড়ো হয়েছেন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও।

আজ বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা করবেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আরও পড়ুন:

এদিকে, রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকাজুড়ে নেয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবির পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনীও। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নজরদারিতে রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে রোববার সন্ধ্যার পর দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে; সীমিত করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলও।

গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার। মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। ৯ কার্যদিন ধরে চলে প্রসিকিউশন ও রাষ্ট্রনিযুক্ত ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন।

২৩ অক্টোবর রাষ্ট্রের প্রধান আইনকর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

যুক্তিতর্কে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে প্রসিকিউশন। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়। তার খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের বিশ্বাস, হাসিনা ও কামালও খালাস পাবেন।

মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রের মোট পৃষ্ঠা ৮ হাজার ৭৪৭। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণ ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণী ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা। সাক্ষী করা হয়েছে মোট ৮৪ জনকে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়।

ইএ