‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ নতুন ধারণা; প্রধান উপদেষ্টা জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ | ছবি: সংগৃহীত
1

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ লঙ্ঘন করেছেন। তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ নতুন ধারণা। ঐকমত্য কমিশনে এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি।’ আজ (বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এখন টিভিকে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্স জারির ক্ষমতা রয়েছে; কিন্তু আদেশ জারির ক্ষমতার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হওয়াকে স্বাগত জানায় বিএনপি। তবে মূল দলিল থেকে প্রধান উপদেষ্টা বহুদূর সরে গিয়েছেন।’

এর আগে, জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টাজানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন আয়োজিত গণভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ‘হ্যাঁ’ সূচক হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠিত হবে। এই প্রতিনিধিগণ একইসঙ্গে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

গণভোটে যে প্রশ্ন থাকবে

প্রশ্নটি হবে এরকম: ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?’

ক) নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হবে।

খ) আগামী সংসদ হবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠিত হবে এবং সংবিধান সংশোধন করতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হবে।

গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার ও সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার-সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকবে।

ঘ) জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

গণভোটের দিন এই চারটি বিষয়ের ওপর একটিমাত্র প্রশ্নে আপনি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিয়ে আপনার মতামত জানাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিষদ তার প্রথম অধিবেশন শুরুর তারিখ হতে ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন হবার পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। এর মেয়াদ হবে নিম্নকক্ষের শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত।

‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা অনুসারে সংবিধানে জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটিও আজকে অনুমোদিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।’

এনএইচ