মামদানির বিজয়ে বৈশ্বিক রাজনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে

জোহরান মামদানি
জোহরান মামদানি | ছবি: সংগৃহীত
0

মামদানির বিজয়ের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় পর বৈশ্বিক রাজনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। তার মধ্যে লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র সাদিক খানের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন লন্ডনবাসী। এদিকে মামদানিকে বিভাজনের ওপর ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। যদিও নিউ ইয়র্কের অবকাঠামো উন্নয়নে মামদানির পরিকল্পনার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প।

সদ্য ৩৪-এ পা দেয়া ভারতীয় পিতা-মাতার সন্তান জোহরান মামদানির গায়ের রঙ বাদামি, ধর্ম ইসলাম এবং রাজনীতিতে ঘোর বামপন্থী। ট্রাম্পের চোখে যিনি শুধু বহিরাগত নন, একজন অবৈধ অভিবাসীও। অথচ নিউ ইয়র্ক সিটির দায়িত্ব এখন এই মামদানির হাতে। ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির মধ্যেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন নিউ ইয়র্ক অভিবাসীদের শহর। এতেই ঘুম হারাম ট্রাম্পের।

নিউ ইয়র্ক শহরের উন্নয়নে মামদানির ভূমিকা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার মতে, একজন কমিউনিস্ট মেয়র শহরের অবকাঠামো পরিকল্পনায় অবদান রাখতে পারবেন না। এ সময় নিজের অভিবাসন নীতির ওপর সাফাই গেয়েছেন ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘একজন কমিউনিস্ট মেয়র হিসেবে মামদানির কার্যকলাপ খুব বেশি হবে না। নিউ ইয়র্ক শহরের অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনায় সেতু, টানেল এবং অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে তার প্রয়োজন হবে না। তবুও আশা করি নিউ ইয়র্কবাসী ভালো থাকবে। নিউ ইয়র্ক শহরকে আমি ভালোবাসি। এখানেই আমার বেড়ে ওঠা।’

মামদানির এ উত্থান রূপকথাকেও হার মানাবে। তার এ জয় বহুভাষী, বহু ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের বিজয়। ভয়ভীতি ও বিভক্তি উপেক্ষা করে ভোটাররা মেয়র নির্বাচিত করেছেন এ ডেমোক্র্যাট নেতাকে। মামদানির বিজয় দীর্ঘ সময় পর বৈশ্বিক রাজনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে।

২০১৬ সালে লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মামদানিকে স্বাগত জানান তিনি। এসময় সাদিক খান জানান, লন্ডন ও নিউ ইয়র্কে সংখ্যালঘু মুসলিম প্রার্থীদের ভোট না দিতে মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

আরও পড়ুন:

সাদিক খান বলেন, ‘নিউ ইয়র্কের মতো লন্ডনও উদার শহর। এসব শহরে বহুসংস্কৃতির, প্রগতিশীল এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের বসবাস। ডোনাল্ড ট্রাম্প যা চিন্তা করেন তা আমাদের বিপরীত। ট্রাম্প লন্ডনকে ঘৃণা করেন। নিউ ইয়র্কবাসীদের মতো লন্ডনবাসীরাও ভয়ের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে আশাকে বেছে নিয়েছে। যা ট্রাম্প মেনে নিতে পারছেন না।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ জোহরান মামদানির জয়কে আশার আলো হিসেবে দেখছেন। লন্ডনবাসীর প্রত্যাশা মুসলিম মেয়র মামদানির হাত ধরেই পরিবর্তন আসবে নিউ ইয়র্ক শহরের। তার মধ্যে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের ছায়া দেখছেন তারা।

লন্ডনের স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘অনেক দিন পর রাজনৈতিক অঙ্গনে সুসংবাদ আসলো। সবার মধ্যে কিছুটা হলেও আশা জাগিয়েছেন তিনি।’

অন্য একজন বলেন, ‘পরিবর্তনের সময় এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর যা বিভাজনের বিরুদ্ধে এবং মানুষকে একত্রিত করার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।’

নিউ ইয়র্কের ১০ লাখের বেশি মানুষ ভোট দিয়ে তাদের নগরপিতা হিসেবে জোহরান মামদানিকে নির্বাচিত করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউ ইয়র্ক, নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়ায় ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের জয়, বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষণীয়।

এসএস