আগামী সপ্তাহে খুলে দেয়া হবে টিটি পাড়া আন্ডারপাস

টিটি পাড়া আন্ডারপাস
টিটি পাড়া আন্ডারপাস | ছবি: এখন টিভি
1

আসছে সপ্তাহে খুলে দেয়া হবে টিটি পাড়া আন্ডারপাস। প্রায় দুই বছরের চরম দুর্ভোগ আর ট্রেন এলেই রেল ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্টের অবসান হতে যাচ্ছে। যদিও কমলাপুরমুখী রাস্তার উপর মেট্রোরেলের স্টেশন নির্মাণের কাজ চলতে থাকায় এই আন্ডারপাসের পুরোপুরি সুফল পেতে সময় লাগবে।

একপাশে অতীশ দীপঙ্কর সড়ক আর আরেক পাশে কমলাপুর আউটার সার্কুলার রোড। মাঝে টিটি পাড়ার লেভেল ক্রসিং, যা দুই পাশে চলাচলকারী কয়েক লাখ মানুষের কাছে দুর্ভোগের আরেক নাম। অফিস, স্কুল কিংবা শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে লাখ লাখ মানুষ ব্যবহার করে এই সড়ক। এই দুর্ভোগ লাঘবে তৈরি করা হয়েছে টিটি পাড়া আন্ডারপাস।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় দুই বছরের কর্মযজ্ঞের শেষে এখন এই আন্ডারপাস উদ্বোধনের অপেক্ষায়। নিচ দিয়ে ৬ লেনের রাস্তার মধ্যে ৪ লেনে চলবে যান্ত্রিক যানবাহন। ৫ মিটার উচ্চতার গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে আন্ডারপাস দিয়ে। আর দুই পাশে রিকশা, সাইকেলের আলাদা লেনের পাশাপাশি পথচারীদের জন্য রাখা হয়েছে ফুটপাত। প্যাডেল চালিত যানবাহনকে যেন বেশি ঢালুতে নামতে না হয় তার জন্য দুই পাশের লেনকে মাঝের ৪ লেনের থেকে উঁচু করা হয়েছে। এখন উপরে রেল আর নিচে অন্যান্য যানবাহন বাধাহীন ভাবে চলাচল করবে।

আরও পড়ুন:

রোড মার্কিং, মাঝের ডিভাইডারে ফুলের গাছ, সড়কের দুই পাশে ল্যাম্পপোস্ট সবকিছু মিলিয়ে আন্ডারপাসের সৌন্দর্য এখন দৃশ্যমান। তবে এর পেছনে এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের সীমাহীন কষ্টের গল্পও আছে। বিকল্প রাস্তা না থাকার কারণে রাস্তা বন্ধ করে তৈরি করতে হয়েছে আন্ডারপাস। যার কারণে দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করতে হয়েছে পথচারী ও যানবাহনগুলোকে। নষ্ট হয়েছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা।

রিকশা চালকদের একজন বলেন, ‘টিটি পাড়ার রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে আমাদের যে কষ্ট হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়েছে।’

পথচারীদের একজন বলেন, ‘কাজ চলাকালীন এই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল। চলাচল করতেই দেয় নাই।’

অবশ্য নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক। জানালেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের কথা।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে যে সমস্যা ছিল সেটা স্পেসের একটা লিমিটেশন ছিল। আমাদের এই আন্ডারপাসের জন্য কমলাপুর আইসিটির বেশ কিছু অংশ আমাদের জন্য ছেড়ে দিয়েছিল। এর থেকে বেশি আমরা উন্মুক্ত করতে পারি নাই। ফলে এখানে বাইপাস নির্মাণ মোটেও সহজ ছিল না।’

মূল সড়ক থেকে ১১ মিটার নিচ দিয়ে আন্ডারপাস তৈরি করায় ভরা বর্ষায় যেন পানি না জমে তার জন্য আছে আধুনিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকৌশলী নীলাকর বিশ্বাস বলেন, ‘আন্ডারপাসের জন্য একটি করে পাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে আন্ডারপাসের সব পানি পাম্প ওয়েলে যাবে।’

সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে সপ্তাহে খুলে দেয়া হবে আন্ডারপাসটি। এরপর যেন এই স্থাপনার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হয় সেই দিকে নজর রাখার কথা মনে করিয়ে দিলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, ‘মূলত এইটার রক্ষণাবেক্ষণ একটি গোষ্ঠী বা স্টেক হোল্ডারে মাধ্যমে হবে না। এটার যে পাম্প হাউজ সেটাকে সঠিকভাবে দেখভাল করা।’

কমলাপুরে মেট্রোরেলের স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্ডারপাসের শতভাগ সুফল পেতে সময় লাগবে।

সেজু