কয়েক বছর আগেও ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদী ছিল দেশিয় মাছের স্বর্গরাজ্য। বর্ষা হোক বা শীত, ইলিশ, রুই, কাতলা, টেংরা, বোয়াল, আইর সব মাছেই ছিল প্রাচুর্য। জেলেপাড়ায় ছিল প্রাণের ছোঁয়া, ভেসে আসতো মাছ বিক্রির হাকডাক।
কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। শিল্পবর্জ্য ও প্লাস্টিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি, নষ্ট হচ্ছে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র। অসচেতনভাবে অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের ফলে কমে যাচ্ছে মাছের স্বাভাবিক বংশবিস্তার। নাব্য কমে গড়ে উঠছে ডুবোচর, বদলে যাচ্ছে পানির প্রবাহ, থেমে যাচ্ছে নদীর প্রাণচাঞ্চল্য।
ভোর থেকেই জেলেরা নেমে পড়েন নদীতে। জাল ফেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। জেলেদের হতাশা আর জালের ফাঁকা চিত্র যেন বলে দেয় নদীর দুঃখের গল্প।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় জেলেদের একজন বলেন, ‘আগে এসময় অনেক দেশিয় মাছ থাকত। এখন দেশিয় মাছ নেই বললেই চলে।’
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের দেশি মাছের চাহিদা আছে। কিন্তু বাজারে দেশি মাছ পাওয়া যায় না। তাই তারা চাষের মাছই বিক্রি করেন।
এদিকে মাছের প্রজনন বাড়াতে কৃত্রিম প্রজনন, নিষেধাজ্ঞা এবং নদী খননের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
বরিশাল বিভাগ মৎস্য অধিদপ্তর পরিচালক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরে এবং ক্ষতিকর বিভিন্ন জাল দিয়ে মাছের বংশ নষ্ট করছে। এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। মাছের প্রজনন ক্ষেত্রগুলো আমরা রক্ষা করছি। এর মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি নদীতে যেন আগের অবস্থা ফিরে আসে।’
এ নদীগুলো শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয় উপকূলীয় হাজারো মানুষের জীবন ও জীবিকার আশ্রয়। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে হারিয়ে যাবে দেশি মাছ, আর নিঃশেষ হবে নদীপাড়ের মানুষের স্বপ্ন।





