চলতি বছরেই বগুড়া প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস | ছবি: এখন টিভি
2

দুই যুগের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে পূরণ হচ্ছে বগুড়াবাসীর স্বপ্ন। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই শুরু হচ্ছে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিষয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছেন, এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।

২০০১ সালের ১৫ জুলাই জাতীয় সংসদে বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১০ মে এসআরও জারি করে আইন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। তবে নানা জটিলতায় তা আলোর মুখ দেখেনি।

দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার পর এবার বাস্তবে রূপ নিচ্ছে বগুড়াবাসীর স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর পাঠদান এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে খুশি স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘বগুড়ায় এর আগে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। প্রথমবার বগুড়াতে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে বগুড়ার যারা ছেলে-মেয়ে আছে তারা অবশ্যই একটা ভালো সুবিধা পাবে।’

অন্য একজন বলেন, ‘ক্ষুদ্রাংশে একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াতে, এটার যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে, এতে বগুড়ার শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। বিশেষ করে মেয়েরা উপকৃত হবে।’

স্থানীয় একজন নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখানে একটা বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। তার জন্য আমরা আন্দোলন করে এখানে একটা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এজন্য আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি।’

অভিভাবকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা দূরে দূরে পরীক্ষা দিতে যেত। এখন তাদের আর সেটা যেতে হবে না।’

আরও পড়ুন:

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বগুড়ায় এতদিন কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত রাজধানীমুখী হতে হয়। নতুন করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি বিষয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষার হার আরও বাড়বে।

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে তো প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হবে। তারপরও বগুড়ার যারা মেধাবী, যারা মেধা তাকা সত্ত্বেও দূরবর্তী স্থানে বা বিভিন্ন কারণে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয় তারা লাভবান হবে বলে মনে করি। বগুড়াবাসী উপকৃত হবে।’

বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বড় বড় কলেজ থেকে জেনারেল শিক্ষার্থীরা বেশি বের হয়ে। সুতরাং এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার মাধ্যমে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী উপকৃত হবে। এটি বগুড়াবাসীর আরেকটি প্রত্যাশা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলছেন, প্রথম ধাপে পাঠদান চালুর জন্য পাঁচটি বিভাগের অনুমোদন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বিষয়ে অনুমোদন পেলে চলতি শিক্ষাবর্ষেই অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।

বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কুদরত-ই-জাহান বলেন, ‘দুটি বিষয় নিয়ে এবছরই আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ। আর জায়গার বিষয়ে যেহেতু ২০০১ সালের অ্যাক্টে শেরপুরের জামালপুর নামক স্থানে জায়গা মেনশন করা আছে, এটা আসলে আরও বড় নীতিনির্ধারণীর বিষয়। এরপর ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমে জায়গা নতুন করে রিলোকেট হলে বা কোথায় হবে এটা এখন পর্যন্ত আমি শিউর না।’

প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শহরের ভিটিটিআই ইন্সিটিউটকে বেছে নেয়া হয়েছে।

এসএস