অভিনয় থেকে রাজনীতির মঞ্চে; থালাপতি বিজয়ের সফলতার সম্ভাবনা কতটুকু

থালাপতি বিজয়
থালাপতি বিজয় | ছবি: সংগৃহীত
1

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার ঘটনা বিরল নয়। রুপালি পর্দার জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে রাজনীতির মঞ্চেও সফল হয়েছেন বহু নায়ক-নায়িকা, যার উদাহরণ এমজি রামচন্দ্রন ও জয়ললিতা। তবে জনপ্রিয় তারকাদের ব্যর্থতার গল্পও আছে। তামিলনাড়ুর চলচ্চিত্র জগৎ থেকে রাজনীতিতে পা রাখা জনপ্রিয় অভিনেতা থালাপতি বিজয় এবার সেই আলোচনায়।

৫১ বছর বয়সী তামিলনাড়ুর জনপ্রিয় অভিনেতা জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। যিনি ভক্তদের কাছে থালাপতি বিজয় নামে পরিচিত। বাবা পরিচালক এস এ চন্দ্রশেখরের হাত ধরে মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে সিনেমার জগতে পা রাখেন তিনি। 

বিজয় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন ১৯৯২ সালে। কয়েক দশকের অভিনয়ে তার তারকাখ্যাতি পৌঁছায় অনন্য উচ্চতায়। ভারতে ২০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেয়া প্রথম অভিনেতাও তিনি।

ভক্তরা তাকে ‘ইলায়া থালাপতি’ বা ‘তরুণ কমান্ডার’ উপাধি দিয়েছেন। ২০২৪ সালে গড়ে তুলেন রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম বা টিভিকে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন তিনি। তবে অভিনয় ছেড়ে পুরোপুরিভাবে রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত অবাক করেছে তার ভক্তদের।

গেলো আগস্টে তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে এক মহাসমাবেশে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন থালাপতি বিজয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অ্যাখ্যা দেন ফ্যাসিস্ট বলে। 

তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে প্রচারণা চালাচ্ছেন নিয়মিত। গেলো শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তার সমাবেশে ১০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম ঘটে। এ সময় হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে হতাহত হয় শতাধিক মানুষ, যা থালাপতি বিজয়ের রাজনৈতিক পথচলা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

থালাপতির আগে বেশ কয়েকজন অভিনেতা রাজনীতিতে এসে সফলতা পেয়েছেন। তামিলনাড়ুতে তারকাখ্যাতির শীর্ষে থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে আসেন এমজি রামচন্দ্রন। 

আরও পড়ুন:

১৯৭৭ সাল থেকে ১০ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। পরে তারই হাত ধরে রুপালি পর্দা ছেড়ে রাজনীতিতে আসেন প্রয়াত জে জয়ললিতা। টানা ছয় মেয়াদে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন জয়ললিতা।

তবে রাজনীতিতে এসে ব্যর্থতার গল্পও আছে ভারতের দক্ষিণের চলচ্চিত্র তারকাদের। দুই শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা তামিল অভিনেতা কমল হাসান ২০১৮ সালে রাজনীতিতে আসেন। 

তবে এখন পর্যন্ত বিধানসভায় কোনো আসন জিততে পারেনি তার দল। তামিল সিনেমার আরেক কিংবদন্তি অভিনেতা রজনীকান্ত রাজনীতিতে আসেন ২০১৭ সালে। রাজনৈতিক দল গঠন করলেও ২০২১ সালে তা ভেঙে দেন তিনি।

তামিল চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করা নেপোলিয়ন ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমএলএ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে নেপোলিয়ন যোগ দেন বিজেপিতে। 

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান উদয়নিধি স্টালিন অভিনয় ছেড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও সাফল্য পেয়েছেন। ২০২৪ সাল থেকে তামিলনাড়ুর উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিনয়শিল্পীরা তাদের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে রাজনীতির মাঠে নামেন। তবে তাদের তৃণমূল পর্যায়ের অভিজ্ঞতা খুব একটা থাকে না, যা অনেক সময় তাদের সাফল্যকে ম্লান করে দেয়।

এসএইচ