স্বচ্ছ নীল আকাশে শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা আর কাশফুলের দোলা-ই বলে দেয় প্রকৃতিতে শরৎকালের আগমনের আভাস। সকাল-সন্ধ্যায় শীতলতা, ভর দুপুরে তেজি সূর্যের প্রখরতা আর সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়লেই নাতিশীতোষ্ণ আবহ— এরকম নানা বৈশিষ্ট্যে শরৎ প্রকৃতিতে নিজেকে তুলে ধরে।
তাইতো ইট-পাথরের নগরীতে পিষ্ট-অতিষ্ট মানুষ বাঙালি সত্ত্বা ও শেকড়ের টানে ছুটে যায় কাশবনে। দু’চোখ ভরে উপভোগ করে প্রকৃতির এ অপরূপ সৌন্দর্য।
কাশফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, শহরের যান্ত্রিক জীবন, দালান-কোঠার ভেতরে থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা মেলে না খুব একটা। তাইতো প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছেন তারা। শরতের আকাশ দেখতে বেশ ভালো লাগার অনুভূতিও প্রকাশ করেন অনেকে।
নানান রঙের ফুল শরৎকে রঙিন করে তোলে। গাছে গাছে শোভা ছড়ানোর পাশাপাশি গাছতলাও পরিনত হয় ফুলের গালিচায়। ঋতুর রাণী শরতের এমন রূপে মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন:
আশ্বিনের আবহাওয়ায় ফলে ভালো ফসলও। এ আবহাওয়া আমন ধান চাষে বেশ উপযোগী। সেচ দিতে হয় না, তাই প্রকৃতির আশীর্বাদে বাড়তি লাভ হয় কৃষকের। ফুল, ফল, ফসলে সমৃদ্ধ এ ঋতু যেমন চুপিসারে আসে, তেমনি চলেও যায়। তাই শিশুদের সঙ্গে শরতের পরিচয় করিয়ে দেয়ার তাগিদ সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘শিশুরা ঋতু চেনে না, তারা বাংলা মাস জানে না। তাদের মোবাইল ফোনে আসক্তি এবং প্রচণ্ড পড়ার চাপ। তাদেরকে নদীর পাড়ে নিয়ে যেতে হবে, তাকে খোলা বটগাছের নিচে নিয়ে যেতে হবে, শরতের জোৎস্না দেখাতে হবে। তাহলে তারা ঋতু চিনবে, প্রকৃতি চিনবে এবং প্রকৃতি চিনলেই মানুষকে ভালোবাসতে পারবে।’
আরেকজন বলেন, ‘বর্ষাকাল চলে যাওয়ার পর প্রকৃতিতে একরকম স্নিগ্ধতা ও কোমলতা চলে আসে এ শরৎকালে। এটা আমরা বরাবরই দেখতে পাই। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটা অনেকটাই অচেনা।’
শরৎ ঘিরে বাঙালির উৎসবেরও শেষ নেই। এ সময়ের সবচেয়ে বড় আয়োজন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা। আশ্বিনের শুভ লগ্নে মন্দির সাজসজ্জায় ও দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন কারিগররা।
কারিগররা জানান, পূজার অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয় তাদের। এছাড়া তাদের প্রতিমার সাজসজ্জা ও অন্যান্য প্রস্তুতি এখন শেষের দিকে বলেও জানান তারা।




