মন্দিরের উঠোনে চলছে ন্যাড়া পোড়ানোর উৎসব। গানের তালে তালে নাচছেন দর্শনার্থীরা, একে অপরের গালে ছুঁয়ে দিচ্ছেন আবির। দৃশ্যটি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর করাচির।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব দোল। হিন্দু সংস্কৃতি মেনে দোলযাত্রার আগে পোড়ানো হয়েছে বুড়ির ঘর; যা ন্যাড়া পোড়ানো নামেই বেশি পরিচিত।
দর্শনার্থীদের একজন বলেন, ‘আমরা ন্যাড়ার ঘর পুড়িয়েছি। এর মানে অশুভ শক্তির বিনাশ আর শুভ শক্তির জয়। আবির মেখে এই উৎসবে শামিল হয়েছি।’
আরেকজন বলেন, ‘এবছর রমজান মাস আর দোল একই সময়ে পড়েছে। তাই খুব সাধারণভাবে দোল উদযাপন করছি। কারণ মুসলিমরা আমাদের ভাই, আমাদের বন্ধু।’
৫শ'র বেশি হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবার করাচির বর্ষবরণ উৎসবে অংশ নিয়েছেন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির মাত্র ৩ শতাংশ হিন্দু। তবুও হিন্দু-মুসলিম জনগোষ্ঠীর মেলবন্ধন এ ধরনের উৎসবকে টিকিয়ে রেখেছে বলে দাবি মন্দিরে আগত দর্শনার্থী ও ভক্তদের।
এদিকে, দোলযাত্রা উপলক্ষে রঙের উৎসবে মেতেছে ভারতবাসী। কলকাতা থেকে বারাণসি, অলিগলি থেকে মহাসড়ক, রাঙা আবিরে বরণ করা হচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তকে। শুধু দোল উপলক্ষে বিদেশ থেকে ভারতে এসেছেন এমন পর্যটকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
দর্শনার্থীদের একজন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছি দোল উদযাপন করবো বলে। এখন পর্যন্ত দারুণ অভিজ্ঞতা। এখানকার মানুষজন আমাকে মন থেকে স্বাগত জানিয়েছে।’
দোল উদযাপনে শামিল সীমান্তে দায়িত্বরত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কর্মকর্তারাও। পরিবারের শূন্যতা ভুলে আবির মেখে ঢোলের তালে নেচে গেয়ে স্বাগত জানিয়েছেন বসন্তকে।
বিএসএফের একজন বলেন, ‘বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স শুধু আমাদের পরিচয় নয়, আমাদের পরিবারও। তাই সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি একসাথে দোল উদযাপন করেছি।’
মূলত সনাতম ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও দোলের বার্তা সার্বজনীন। বিশ্ব থেকে সব অন্ধকার আর কালো ছায়া দূর হবে, রঙের স্পর্শে সেজে উঠবে পৃথিবী- এমনটা কামনা সবার।