বছরের প্রথম মাসেই তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড, নাসার বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ

.
পরিবেশ ও জলবায়ু
বিদেশে এখন
0

বছরের প্রথম মাসেই তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে পরিবেশবাদীদের চিন্তায় ফেলেছে সাল ২০২৫। ইতিহাসের সবচেয়ে তাপমাত্রার মাসের রেকর্ড জানুয়ারি মাস। সেই জানুয়ারিতেই মারাত্মক দাবানলের কবলে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াবাসী। লস অ্যাঞ্জেলেস দাবানলের একমাস পূরণের দিনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। পরিবেশ বিপর্যয়ের 'ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট' হিসাবেও চিহ্নিত করেছেন গেল জানুয়ারিকে।

গেল ৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া দু'টি ভয়ংকর দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসে ৩৭ হাজার একর বনভূমি। প্রায় একমাস গেল ২ ফেব্রুয়ারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে পর ইটন ও প্যালিসেডসের দাবানল।

স্মরণকালের ভয়াবহ এই দাবানলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯ জন। হলিউড তারকাদের চোখ ধাঁধানো গাড়ি-বাড়িসহ স্থানীয়দের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৫ হাজার থেকে সাড়ে ২৭ হাজার কোটি ডলার।

আরও উদ্বেগের বিষয়, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল এই অঙ্গরাজ্যটিতে ক্ষয়ক্ষতির বিচারে মারাত্মক ১০টি দাবানলের ৮টিই হয়েছে গত ৫ বছরে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন আবহাওয়ার অস্বাভাবিক হারে শুষ্ক হয়ে পড়ায় ফিবছর মারাত্মক দাবানলের কবলে পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়াবাসী।

এদিকে, ৭ ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেস দাবানলের একমাস পূরণের দিনে ভেঙ্গেছে তাপমাত্রার রেকর্ড। ইউরোপিয়ান কপার্নিকাস ক্লাইমেট সার্ভিসেসের প্রতিবেদন বলছে, ইতিহাসের সবচেয়ে গরম জানুয়ারির রেকর্ড গড়ছে ২০২৫-এর জানুয়ারি। সংস্থাটির দাবি, ১৯ শতকের পর থেকে যে কোনো জানুয়ারি মাসের তুলনায় ২০২৫ সালের জানুয়ারির তাপমাত্রা ১ দশমিক সাত পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

এমনকি উষ্ণতম বছর, ২০২৪ এর তুলনায় ২০২৫ এর জানুয়ারিতে তাপমাত্রা বেড়েছে ০ দশমিক ১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতল আবহাওয়া চক্র 'লা নিনা' শুরু না হলে এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারতো। যদিও রাতারাতি পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কা আমলে নিলেও পুরোপুরি সমর্থন করেন না নাসার বিজ্ঞানীরা।

নাসার বিজ্ঞানী গ্যাভিন স্যামিডথ বলেন, ‘গেল ২০ বছরের তুলনায় এই ২০ বছরে দ্রুতগতিতে কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ছে। এটা রাতারাতি তাপমাত্রা বাড়ার আলামত না হলেও তাপমাত্রা পরিবর্তনের কিছু প্রভাব এড়ানো যাচ্ছে না। কিন্তু পরিবর্তন যে দ্রুতগতিতে হচ্ছে তা স্বীকার করা উচিৎ। আমরা কার্বনের ব্যবহার কমাতে পারছি না।’

গেল একমাসে জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে নমুনা দেখা গেছে তাতে করে এই পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিজ্ঞানীরা। সাগরের পানির উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে অ্যাটলান্টিকে ব্যাহত হতে পারে স্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ। এরফলে উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়তে পারে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা। আশঙ্কা আছে, মারাত্মক দাবানল ও আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণেরও।

এএইচ