ধান চাষে ‘সমলয়’ পদ্ধতি: কম খরচে বেশি ফলন। ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধানের আবাদ।
ধান চাষে কৃষকদের শ্রমিক সংকট নিরসন, সময় অপচয় রোধ ও অতিরিক্ত খরচ রোধে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ফরিদপুরে 'সমলয়' চাষ পদ্ধতিতে বীজতলা ও ধানের চারা রোপণে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি। ফলে কৃষিতে খুলছে এক নতুন দুয়ার। ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধানের আবাদ।
প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি ও চারা রোপণ না করে প্লাস্টিকের ট্রে-তে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে লাগানো হয়েছে ধানের বীজ। ট্রেতে তৈরি হয়েছে বীজতলা, সেখান থেকে তুলে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার মেশিনের মাধ্যমে চলছে ধানের চারা রোপণ।
সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় ফরিদপুর সদর ও বোয়ালমারী উপজেলার ১০০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। মেশিনের মাধ্যমে চারা রোপণ আবার মেশিনের মাধ্যমেই হবে ধান কাটা ও মাড়াই। সময়, শ্রম ও খরচ কম লাগায় খুশি কৃষক।
একজন কৃষক বলেন, ‘জমি লাগাতে গেলে পাঁচ থেকে ছয় জন মানুষ লাগে। আর মেশিন দিয়ে লাগাতে গেলে তো তা লাগে না। বিঘাপ্রতি হতে লাগানোর চেয়ে এক মণ দান বেশি হয়। এছাড়াও আগাছা কম হয়, পানি কম লাগে।’
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সমলয় পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। এজন্য কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সারসহ দেয়া হচ্ছে যান্ত্রিক সুবিধা। ফলন বেশি হওয়ায়, শ্রমিক কম লাগায় চাষিরা আবাদে আগ্রহী হচ্ছে।
ধানের ক্ষেত্রে বেশি খরচ হয়ে থাকে রোপণ ও কর্তনে, যন্ত্রের মাধ্যমে রোপণ ও কর্তনে চাষিরা লাভবান হচ্ছে বেশি। যন্ত্রের মাধ্যমে এক হেক্টর জমিতে রোপণ ও কর্তনে ২৬ থেকে ২৮ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে চাষিদের।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘কৃষকদের উদ্ভূত করার জন্য যে এই যন্ত্র চালাতে গেরে এরকম ছোট একটি জায়গার দরকার হয়, কৃষক যদি গ্রুপভিত্তিক এরকম ফসল চাষাবাদ করে তাহলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং সমলয়ের থিম সাফল্য পাবে।’
দিন দিন কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, সেই হিসেবে কৃষিতে আধুনিকায়ন বা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে চাষিরা বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, ‘দিনদিন কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। সে হিসেবে কৃষিতে আধুনিকায়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলতি বছর জেলায় ২৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।