কারওয়ান বাজারে মোড়ের পান্থকুঞ্জ পার্কের ভেতরে মাটি খননের পাইলিং মেশিনের সামনেই কনকনে শীত উপেক্ষা করে তাঁবু টানিয়ে প্রায় একমাস কাটিয়ে দিয়েছেন একদল গাছ এবং পরিবেশপ্রেমী।
পান্থকুঞ্জ পার্কের বুক চিরে এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প করতে গিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে প্রায় ৪০ প্রজাতির দুই হাজার গাছ। খেলার মাঠসহ সবুজায়ন নষ্টের পাশাপাশি পাখিরাও হারিয়েছে আবাসস্থল। প্রকৃতি বিধ্বংসী এই কাজের প্রতিবাদে অবস্থান করতে গিয়ে এই আন্দোলনকারীরা জানালেন হামলার শিকারসহ তারা লড়াই করছেন নানা প্রতিবন্ধকতার সাথে।
একজন আন্দোলনকারী বরেন, 'যে নকশাকারী ছিল, তার কর্মীরা এসে আমাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে। আমরা যে পাঁচ থেকে সাতজন এখানে থাকি তাদের পিটিয়েছে তারা।'
আজ (শনিবার, ১১ জানুয়ারি) বিকেলে পান্থকুঞ্জ পার্কে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচির ৩০তম দিনে হাতিরঝিল জলাধার ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে পলাশী পর্যন্ত চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে র্যাম্প নির্মাণ প্রকল্পের কাজ বাতিল এবং হামলার প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনটি।
পরিবেশ রক্ষায় আয়োজিত এই নাগরিক সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বর্তমান সরকারকে প্রতিটি প্রকল্পে প্রকৃতি ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
জোনায়েদ সাকী বলেন, 'সরকারের কাছে আমরা এই আহ্বান জানাবো যে প্রতিটি প্রকল্পকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নতুন করে যাচাই-বাছাই করতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে। এবং প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষা করেই এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।'
সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ জানান, হাসিনা সরকারের পরিবেশ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে করা চুক্তি ও প্রকল্প অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলমান রাখলে তা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাথে হবে প্রতারণা।
আনু মুহাম্মদ বলেন, 'সারাদেশের প্রাণ-প্রকৃতির পরিবেশ কোন কোন প্রকল্পে নষ্ট হয়েছে এবং তার জন্য কারা দায়ী এটার একটা সামগ্রিক চিত্র আমরা সরকারের কাছ থেকে চাই। এবং সবগুলো চুক্তি এবং প্রকল্প পুনঃমূল্যায়ন হতে হবে। যেগুলো ক্ষতিকর সেগুলো অবশ্যই বাতিল করতে হবে।'
এ সময় অবিলম্বে আন্দোলকারীদের সাথে বসে পান্থকুঞ্জ পার্ককে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান বক্তারা।