যশোরের বিভিন্ন স্থানে নিভৃত পল্লির সবুজ প্রকৃতির ভেতর বিশাল জায়গাজুড়ে ফলবাগান। সারি সারি গাছ জুড়ে শোভা পাচ্ছে রসে টইটম্বুর পাকা কমলা ও মাল্টার থোকা। রং ও আকার দেখে গাছ থেকে পছন্দমতো কমলা তুলে নিচ্ছেন ক্রেতা। ঘুরে ঘুরে এভাবে কমলা কেনার দৃশ্য বিদেশের মাটিতে দেখা মিললেও দেশে ব্যতিক্রম।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নী গ্রামের উদ্যোক্তা আব্দুল করিম। ২০১৪ সালে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ১ বিঘা জমিতে শুরু করেছিলেন মাল্টা চাষ। বর্তমানে ১০ বিঘা জমিতে এসব ফলের চাষ করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে খরচ হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।যেখান থেকে ৩০ লাখ টাকার বাণিজ্যের আশা করছেন এই আব্দুল করিম।
নিজ ফলবাগানে আব্দুল করিম
মাল্টা ও কমলা চাষি আব্দুল করিম বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা ২০ থেকে ২২ লাখ বিক্রি করেছি। আর যে ফল আছে তা প্রায় ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। আমি স্বপ্ন দেখি নিজেদের ফলের মাধ্যমে আমাদের দেশের কমলা ও মাল্টা আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে।’
শুধু আব্দুল করিম নয়; একই উপজেলার অহিদুজ্জামান, ইসমাঈল হোসেনসহ অর্ধশতাধিক চাষি মাল্টা ও কমলা চাষ করেছেন। যাতে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়ার আশা তাদের।
কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি বছর এই জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। যেখানে উৎপাদন হবে ৩ হাজার ১৫৭ টন মাল্টা। যার বাজার মূল্যে ২২ কোটি টাকা। আর কমলা চাষ হয়েছে ১৩ হেক্টর জমিতে। এতে ফল হবে ৬৭ টন। যার বাজার মূল্যে ২ কোটি টাকা।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. আবুল হাসান বলেন, ‘ মাল্টা এখন আমাদের দেশেই হচ্ছে এবং আমাদের কৃষকরাই এটি উৎপাদন করছে। আমরা এ বিষয়ে কৃষকদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে আসছি। এছাড়া কৃষকদের আমরা বিভিন্ন কারিগরি সহযোগিতাও দিয়ে থাকি।’
গেল বছর এই জেলায় ১৪০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়। যেখান থেকে ২ হাজার ৫২০ টন মাল্টা ও কমলা হয়। যা বিক্রি হয় ২০ কোটি টাকায়।