ক্রিকেট , ফুটবল
এখন মাঠে
0

বিজয়ের ৫৪ বছরেও প্রকৃত সম্মান পান নি মুক্তিযোদ্ধো ক্রিকেটার ও ফুটবলাররা

বিজয়ের ৫৪ বছরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সঠিক ইতিহাস জানে না দেশের মানুষ। কারণ দল গঠনে মূল ভূমিকায় থাকা বাংলাদেশ ক্রীড়া সমিতির অস্তিত্ব রক্ষা করতে না পারা। এমনটাই মনে করেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহ-অধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ক্রিকেটারের অভিযোগ বিসিবির দায়িত্ব প্রাপ্তরাও পারেনি যোগ্য সম্মান দিতে তাদের।

পুরো দেশ তখন পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে উত্তাল। ঘরে ঘরে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় প্রতিটি মানুষ।

রণাঙ্গনে যখন পাকিস্তানিদের বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা বাঙালিদের, ঠিক তখনই ফুটবলের ময়দানে বাংলাদেশের পতাকা হাতে একটা দল। যার নামকরণ করা হয় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা রাখা দলটির সহঅধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা বলছেন, যোগ্য সম্মান পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আফসোস নেই। তবে কষ্ট হয়- এখনো অনেকেরই অজানা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সঠিক ইতিহাস।

তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া সমিতি হারিয়ে যাওয়াতেই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বেশি প্রমিনেন্ট হয়েছে। এটা থাকলে আমাদের সংগঠন আরো সুন্দর হতো, ভালো হতো এবং আমরা অনেক কাজ করতে পারতাম। আমরা তো কিছুই করিনা ভাতা নেয়া ছাড়া। যত ডকুমেন্টস ছিল, পেপার ছিল সব তো হারিয়ে গেছে।’

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সহঅধিনায়ক প্রতাপ শংকর হাজরা বলেন, ‘একেক জন একেক কথা বলছে। একেক ভাবে নিজের বক্তব্য পেশ করছে। এটা তো আর হতো না।’

তৎকালীন সময়ে ফুটবলে মাতোয়ারা দেশটির ক্রিকেট নিয়ে ছিল না তেমন কোনো তৎপরতা। তবু ঘোষণা আসে ফুটবলের মতো তৈরি করা হোক স্বাধীন বাংলা ক্রিকেট দল।

সাবেক ক্রিকেটার বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকতুর রহমান বলেন, ‘আতাউর মল্লিক আমাদের বললেন দেখো আমাদের একটা নির্দেশ এসেছে ক্রিকেট টিম করতে হবে। দল ঘোষণা দায়িত্ব তো আমাকে দিয়েছে। এখন আমার নেশা তো ওইদিকে। আমি দেশে যাব, শত্রুসেনাদের সাথে যুদ্ধ করবো দেশকে স্বাধীন করবো। যদি বেঁচে থাকি আর যুদ্ধ যদি আরো বাড়ে তখন দরকার হলে আপনি আমাকে একটা খবর পাঠাবেন। আমাকে যদি আমার কমান্ড থেকে ছাড়ে সেক্টর থেকে ছাড়ে আমি অবশ্যই দেশের জন্য ক্রিকেট খেলবো।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্ন ছিল শওকতুর রহমানের। কিন্তু ক্রিকেট বোর্ডে যুক্ত হওয়া তো দূরে থাক প্রাপ্য সম্মানটুকুও পায়নি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া এই যোদ্ধা।

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হলাম, বৈষম্যের শিকার সবসময়ই। তখন থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত। বিগত বছরগুলোতে এতগুলো যে মোস্তাক-জুয়েল যে ক্রিকেট টা হয় কই আমাদের তো একটা আমন্ত্রণও জানানো হয় না।’

রণাঙ্গন কিংবা ক্রীড়াঙ্গন, যেখানেই হোক ৭১ এর মুক্তিকামী বাঙালির সবারই লক্ষ্য ছিল এক এবং অভিন্ন। তা হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের ৫ দশকের বেশি সময় পর ২৪ এর অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশের কাছে চাওয়া প্রাপ্য সম্মানটুকু যেন পান তারা।

এএইচ