ডেঙ্গু যেন এবার কোনো মৌসুমের তোয়াক্কা করছে না। বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে শীতের মৌসুম শুরু হলেও ডেঙ্গুর দাপট কোনোভাবেই কমছে না। অন্যান্য বছর নভেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলতি বছর নভেম্বরেই ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ১৭৩ জনের।
শীতেও কেন মৃত্যু বাড়ছে তার পেছনে হাসপাতালে দেরিতে আসা এবং সচেতনতার অভাবই প্রধান কারণ, এমনটাই জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ (সোমবার, ২ ডিসেম্বর) সকালে মহাখালীর স্বাস্থ্যভবনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য দেয়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয় ঢাকা বিভাগে চলতি বছর আক্রান্ত এবং মৃত্যু সবচেয়ে বেশি, আক্রান্ত হয়েছে ৫২ হাজার ৯৭৪ জন এবং মৃত্যু ৩৩৯ জন। এছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মৃত্যু বেশি বলেও জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ঢাকার বহুতল ভবনে সবচেয়ে বেশি এডিসের লার্ভা মিলছে। সঠিক সময়ে হাসপাতালে না আসায় এবং সচেতনতার অভাবে মৃত্যু বাড়ছে উল্লেখ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচারণায় জোর দেয়া দরকার বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, 'এ পর্যন্ত আমরা যেগুলো দেখেছি যে মৃত্যু যাদের হচ্ছে সবাই দেরিতে আসছে, যখন আর চিকিৎসা দিয়ে এটা কন্ট্রোল করার সময় থাকে না। আমাদের শরীরের একটা ক্ষমতা আছে। এই ক্ষমতা কতটুকু নষ্ট হয়ে গেলে আমরা এটা ফিরিয়ে আনতে পারবো এটা অনেক বেশি জরুরি। আমরা এটাকে মাল্টি অর্গান ফেইলার বলি। শরীরের একাধিক অঙ্গ যদি তার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এটাকে মাল্টি অর্গান ডিসফাংশন সিন্ড্রোম বলি। এটি হয়ে গেলে কোনোভাবেই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না।'
এ সময় তিনি ডেঙ্গু চিকিৎসায় কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে সরকারি বেসরকারি যেকোনো হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, 'কোনো রোগীকে প্লাটিলেট দিতে বলা তো মেডিকেল সায়েন্সে এখন বলছে না। এটার একটা প্রোটোকল আছে।'
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৬৭ জন চিকুনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাসে ১১ জন আক্রান্ত হয়েছে।