গত ১৫ বছরে নিজেরা সুবিধা নিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের আর্থিক খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। দেশের বাইরে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে ১৫ বিলিয়ন ডলারের। গবেষণা সংস্থা সিপিডির তথ্য অনুযায়ী, বিগত সরকারের আমলে ২৪টি বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা রয়েছে। তাতে ১৫ বছরে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্যও তুলে ধরে ধরা হয়।
বিগত সরকারের আমলে অপরিকল্পিত অবকাঠামো উন্নয়নে বাড়ে ঋণ। আর সেই বোঝার চাপ গিয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের ওপর। এত অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতিতে তলানিতে চলে যায় রিজার্ভ ও ব্যাংকিং খাত। সেই সাথে হুমকিতে পড়ে সার্বিক অর্থনীতি।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এ খাতের নানা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তবে আগামী ৬ মাস বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য খুবই স্পর্শকাতর সময় বলছেন অর্থনীতিবিদরা। বৃহস্পতিবার এক সেমিনারে এসব কথা তুলে ধরেন তারা।
সেমিনারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে রিজার্ভ দ্রুত বাড়ানো না গেলে বিপদে পড়ার শঙ্কার কথা জানান তারা। বলেন বাংলাদেশ এখন মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ সংকটের দ্বৈত বিপদে আছে।
এসময় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, জনগণের লুণ্ঠিত সম্পদ তাদের ফিরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া না হলে বিপ্লব প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘দুর্নীতির যে পাহাড় গড়ে উঠেছে সেখান থেকে যদি আমরা জনগণের সম্পদ ফিরিয়ে নিতে না পারি তাহলে আর কীসের বিপ্লব হলো।’
তার মতে আর্থিক স্বস্তি ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে সংস্কার কোনোই কাজে আসবে না।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘যদি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জনগণ স্বস্তি না পায় এবং দেশের আইন–শৃঙ্খলাতে যদি মানুষ নিরাপদ না বোধ করে, অর্থাৎ আর্থিক স্বস্তি ও নিরাপত্তা এ দুটোকে যদি ঠিক করা না যায়, তাহলে সংস্কারের কোনো উচ্চাশা আমরা অর্জন করতে পারব না।’
এর আগে তিনি জানান, আগামী রোববার নাগাদ শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে। যা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে সোমবার। তখন জানা যাবে অর্থনীতির কোথায় কী ক্ষত হয়েছে।