“অনেক দূরে যাও, একসাথে যাও” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৯ নভেম্বর আয়োজিত এই সম্মেলনে পাঁচজন বৈশ্বিক তরুণ নেতাকে সম্মানিত করা হয়। যেখানে সোহানুর বাংলায় ভাষণ দেয়ার গৌরব অর্জন করেন। ২৭ বছর বয়সী সোহানুর রহমান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা অর্জন করেছেন।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের অফিসের হোম প্যালাইস ডেস নেশনসে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানটি সরাসরি ওয়েব কাস্ট করা হয়। অন্যান্য বিজয়ীরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের মার্লে ডায়াস (১৯) মিডিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিনিধি; ফ্রান্সের শানলি ম্যাকলারেন (২৫) অনলাইনে জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা; মেক্সিকোর আলভারো কুইরোজ (২৫) গৃহহীনদের সাহায্য করা; এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সিনথিয়া হোউনিউহি (২৯) জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকার।
সোহানুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস যা এখন ইয়ুথনেট গ্লোবাল নামে পরিচিত। জলবায়ু সুবিচার নিয়ে তৃণমূলে কাজ করছে এমন তরুণদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস। ২০১৬ সালে বরিশাল শহরে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সংগঠনটি যুব জলবায়ু ঘোষণাপত্র তৈরি করে বর্তমানে দেশের প্রায় ৫০টি জেলায় কয়েক হাজার তরুণ স্বেচ্ছাসেবকের নেতৃত্বে কাজ করছে।
দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বের রাজপথেও। স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোজনের উদাহরণ তৈরি করতে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে গড়ে তুলেছে চর ইয়ুথনেট। সম্প্রতি, সোহানুর ও তার দল বাংলাদেশে বৃহত্তর গণতন্ত্রের পক্ষে ছাত্র নেতৃত্বাধীন জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। সোহানুর অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডায় জলবায়ু পদক্ষেপকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছেন।
সোহানুর রহমান তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, এবং পরিবেশগত রূপান্তরের ক্ষেত্রে তার অসামান্য অবদানের জন্য এ সম্মাননা অর্জন করেছেন। বাংলায় ভাষণ প্রদানকালে তিনি তার সাহসী সহকর্মী শ্রাবণসহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহিদ ও আহত সমস্ত তরুণ যোদ্ধাদের এবং এই বিশ্বকে আরও ভাল, আরও সুন্দর জায়গা করে তোলার জন্য প্রতিদিন প্রচেষ্টারত সমস্ত অক্লান্ত জলবায়ু যোদ্ধাদের এই পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন।
এর আগে, সোহানুর রহমান আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে (কপ২৯) সরকারি যুব প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সাথে সাক্ষাৎ করেন, যারা তাঁর জলবায়ু ন্যায়বিচার ও যুব নেতৃত্বাধীন সক্রিয়তার প্রতি তার সমর্থনের প্রশংসা করেছেন।