ইউরোপ
বিদেশে এখন
0

আজারবাইজানসহ বিভিন্ন স্থানে পরিবেশকর্মীদের বিক্ষোভ

জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন, কপ টোয়েন্টি নাইন চলাকালে আয়োজক দেশ আজারবাইজানে বিক্ষোভ করেছে পরিবেশবাদীদের একাংশ। শনিবার, বাকুতে কপ সামিটের মূল ভেন্যু একটি সাধারণ কক্ষে জড়ো হয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, উন্নত রাষ্ট্রগুলো আর্থিক অনুদান না বাড়ালে অনুন্নত ও দরিদ্র রাষ্ট্র কখনোই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করতে পারবে না। এছাড়া পরিবেশ দূষণের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্লাইমেট প্যারেড। আর জি টোয়েন্টি সম্মেলন শুরুর প্রাক্কালে জোটের নেতাদের উদাসীনতার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে ভিন্নধর্মী এক প্রদর্শনী করেছে ব্রাজিলের আদিবাসী সংগঠন।

গলা পর্যন্ত পানিতে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন, চীনের শি জিনপিং, ভারতের নরেন্দ্র মোদি কিংবা রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের মতো বিশ্ব নেতা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে যাদের দায় সবচেয়ে বেশি, যাদের উন্নয়নের গরমে গলে যাচ্ছে বরফ, বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা, সেই জি টোয়েন্টি জোটের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতাদের ছবি ব্যবহার করে এভাবেই প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্রাজিলের বেশ কিছু আদিবাসী সংগঠন।

তাদের একজন বলেন ‘এই ক্যাম্পেইনের নাম দিয়েছি, 'এই প্রশ্নের জবাব আমরাই দেবো'। আদিবাসীরা তাদের মতো করে দেখাতে চেয়েছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে। জি টোয়েন্টি সম্মেলনে যে বড় বড় নেতারা অংশ নেন, তাদের ছবি জোগাড় করে সেগুলোর অর্ধেক পানিতে ডুবিয়ে রেখেছি। এই রাষ্ট্রপ্রধানরাই বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ শাসন করেন। পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে তারা কতখানি ব্যর্থ, আমরা সেটাই প্রদর্শনের চেষ্টা করেছি।’

১৮ নভেম্বর ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শুরু হতে যাচ্ছে জি টোয়েন্টি সামিট-২০২৪। সম্মেলনের ঠিক তার আগ মুহূর্তে প্রতীকী এই বিক্ষোভে অংশ নিয়ে দেশটির আদিবাসীরা বলছেন, কার্বন নিঃসরণ বন্ধের পাশাপাশি জলবায়ু সংকট মোকাবিলা করতে হলে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সাথে আলোচনা করতে হবে। সম্মেলনের আগে এ ধরনের প্রতিবাদ বা বিক্ষোভের আশঙ্কা থাকায় শহর জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে লুলা ডি সিলভা প্রশাসন।

তবে, জি টোয়েন্টি সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের সামিট শুরুর আগে যৌথ বিবৃতি দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জোটভুক্ত ২০ দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। বিশেষত, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অর্থ বিনিয়োগ, ধনী দেশগুলোর থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে একমত হতে পারছেন না তারা।

এদিকে, জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় সপ্তাহেও আজারবাইজানের বাকুতে সামিট ভেন্যুতে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন পরিবেশবাদীরা।

জাতিসংঘের গাইড লাইন অনুসারে, সংস্থাটির যে কোন আয়োজনের মূল ভেন্যুর আশেপাশে গণবিক্ষোভ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও জলবায়ু সম্মেলনের ক্ষেত্রে সে নিয়ম তুলে নিয়েছে জাতিসংঘ। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা চাইলে সম্মেলন চলাকালেই ভেন্যুর পূর্বনির্ধারিত জায়গায় যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেন।

একজন পরিবেশকর্মী বলেন, ‘ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে-এটা জানাতেই এখানে এসেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে জড়িত দেশগুলো ক্ষতিপূরণের দায় এড়াতে পারে না। এটা আমদের প্রাপ্য।’

অন্যদিকে কপ টোয়েন্টিনাইন উপলক্ষ্যে ক্লাইমেট প্যারেডে অংশ নিয়ে নাচ ও গানের মাধ্যমে জলবায়ু রক্ষার বার্তা দিয়েছে ইতালির অন্তত ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠন। জলবায়ু দূষণের সাথে যারা জড়িত দ্রুততম সময়ে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

এএম