জলবায়ু সম্মেলনের দ্বিতীয় বিশ্বমঞ্চে বিশ্বনেতাদের কাতারে অংশ নেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। এদিন বাকুর স্থানীয় সময় বিকেলে তিনি বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আসেন।
সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষুদ্র কৃষকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। নেদারল্যান্ড সরকারের সাথে যৌথ উদ্যোগে এ আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা জানান, জলবায়ুর প্রভাবে হুমকির মুখে কৃষি। কমছে উৎপাদন, হতাশ হচ্ছে কৃষক। তাই কৃষকরা খাদ্য উৎপাদন থেকে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখলেও তার সুবিধা তারা পাচ্ছেন না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেন, 'জলবায়ুর প্রভাবে কৃষি হুমকির মুখে। ফসলসহ মানুষেও নানা ধরনের ক্ষতির মুখে পরছে। কৃষকরা খাদ্য উৎপাদন থেকে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব ভূমিকা রাখছে কিন্তু তারা খুব বেশি সুবিধা পাচ্ছে না।'
কৃষিতে নারীর অবদান অপরিসীম উল্লেখ করে তাদের নানা ঝুঁকির কথা তুলে ধরেন ডক্টর ইউনূস। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা মূলত উচ্চবিত্তদের জন্য ছিল, সেখানে নারী ও কৃষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেই গ্রামীণ ব্যাংক কাজ শুরু করেছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেন, 'দেশে নারী কৃষকের সংখ্যাও বাড়ছে। জলবায়ু প্রভাবে নারীরাও হুমকির মুখে রয়েছে। দেশের যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা রয়েছে তা অনেকটাই উচ্চবিত্ত মানুষের জন্য। কৃষকরা ব্যাংকিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই কৃষকদের সুবিধা বাড়াতে ও সকল মানুষের জন্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে গ্রামীণ ব্যাংক যে ফরমুলা ব্যবহার করা তা সকল ব্যাংকে চালু করা উচিত।'
জলবায়ুজনিত আজকের সংকট মূলত মানুষের তৈরি, তাই এর সমাধানও মানুষেরই করতে হবে বলে মত দেন নোবেল জয়ী এ বিশ্ব নেতা।
ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেন, 'জলবায়ু প্রভাবের যে সমস্যা তা আমরাই তৈরি করেছি। এটার সমাধানের জন্য এখানে আসছি। আমরা যদি সাতদিন কার্বন নিঃসরণ করি তাহলে নিজেরা একদিন কমিয়ে ছয়দিনে নিয়ে আসি। এভাবেই কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে।'
অন্য সব খাতের মত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও তরুণরাই নেতৃত্ব দেবেন বলে আশা করেন ডক্টর ইউনূস।
তিনি বলেন, 'তরুণরাই এই বিষয়টা বেশি গুরুত্ব রাখতে পারে। তরুণরাই সারা পৃথিবীতে সব ধরনের পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিয়েছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে অভিঘাত মোকাবিলায়ও তারাই এগিয়ে আসবে।'