শুক্রবার অনানুষ্ঠানিক এক সেশন শেষে ইইউ কমিশনার উরসুলা ফন ডার লিয়েন বলেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর ইউরোপ-আমেরিকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যনীতি নিয়ে সমঝোতায় বসতে চায় ইইউ। এছাড়া, আটলান্টিক মহাসাগরকেন্দ্রিক নতুন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে শুরু থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সুসম্পর্ক ধরে রাখার বিষয়ে ইউরোপ আত্মবিশ্বাসী বলে মনে করেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রধান এটিও নিশ্চিত করেন, রাশিয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানির বিষয়ে ভাবছে ইউরোপ।
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন বলেন, ‘সরাসরি আলোচনা না করলেও আমাদের কথা হয়েছে। আলাপের মূল বিষয় ছিল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি। আমরা এখনও রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি করি। এর পরিবর্তে আমেরিকার এলএনজি আমদানির কথা ভাবছি। এটা আমাদের জন্য যেমন লাভজনক হবে, তেমনি ইউরোপে জ্বালানির দামও কমবে।’
যদিও, নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে ইউরোপের এই মাতামাতি ভালো চোখে দেখছে না জার্মানি। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ মনে করেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তোষামোদের কোনো প্রয়োজন নেই। আর ইউরোপের নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিভাবকত্ব জার্মানি একেবারেই সমর্থন করে না।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রসঙ্গে এত আলোচনার কিছু নেই। এই ইস্যু নিয়ে এত ভাবারও কোনো প্রয়োজন নেই। যেটা দরকারি সেটা বাস্তবায়নের সক্ষমতা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আছে। আমাদের অবশ্যই আলোচনায় বসা উচিত। আমরা কোনো দেশের কাছে নিরাপত্তা সুবিধা চাই না। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। স্বাধীন বাণিজ্য নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে পৃথিবী আরও বেশি বসবাসযোগ্য হয়ে উঠবে।’
এদিকে, ইউরোপে চলমান সংঘাতে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত সরকার প্রধানের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চান ইউরোপীয়ান কাউন্সিল প্রধান চার্লস মিশেল। আর ইউক্রেন রাশিয়ার সংঘাত বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পই একমাত্র কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করেন ইইউ সামিটের আয়োজক দেশ হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান। যদিও ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে অন্য কোনো দেশের মুখাপেক্ষী হওয়ার পক্ষে নন তিনি।
ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অবস্থান ও উদ্দেশ্য এক বলে মনে করেন ইইউ নেতারা। বিশ্বে শান্তি স্থাপন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও জ্বালানি ইস্যুতেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি জড়িত ইউরোপ। আগামী ৪ বছরে 'ট্রাম্প টু পয়েন্ট ও' প্রশাসন ইউরোপের সাথে কতটা বন্ধুসুলভ আচরণ করবে- সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।