দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে ১৫ সদস্যের অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পরিষদ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। তবে নতুন এই পরিষদ গঠন নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এদিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পলাতক রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। এতে ব্যাহত হয় প্রকল্প বাস্তবায়ন, প্রশাসনিকসহ সব ধরনের কার্যক্রম। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে তিন পার্বত্য জেলায় ১৫ সদস্যের অর্ন্তবর্তীকালীন পরিষদ গঠন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়।
গেল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। এরপরই নতুন কমিটিতে অচেনা মুখ নিয়ে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
তিন পার্বত্য জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাৎসরিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে থাকে জেলা পরিষদ। তবে নতুন এই কমিটি পাহাড়িদের আশা-আকাঙ্ক্ষা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় দায়িত্ব পালন চ্যালেঞ্জিং হবে- মনে করছেন তারা।
বিগত দিনে প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগে জর্জরিত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। এবার দায়িত্ব নিয়েই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানিয়েছেন রাঙামাটির নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার।
তিনি বলেন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পর্যটন এগুলোকে আমি প্রাধান্য দেব বলে মনে করছি।’
এদিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয়দের মাঝে।
অন্তর্বর্তীকালীন এই পরিষদ পাহাড়িদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও পাহাড়ি বাঙালি সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদী তারা। পাশাপাশি কুকি চিনের সমস্যা সমাধানের কাজ করার আশ্বাস নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের।
এদিকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পরিষদে নারী চেয়ারম্যান নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি পাহাড়ি বাঙালি সংঘর্ষসহ নানা কারণে আলোচিত খাগড়াছড়িতে দায়িত্ব পেয়েছেন জিরুনা ত্রিপুরা। প্রশ্ন উঠেছে খাগড়াছড়ি জেলা কমিটিতে স্থান পাওয়া নতুন মুখ নিয়েও।
১৯৮৯ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি তিন পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ স্থাপিত হয়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ৫ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে পরিষদ গঠনের কথা থাকলেও নিয়ম মানে নি কোনো সরকার। এ অবস্থায় আগামীতে স্থানীয়দের ভোটের ভিত্তিতে পরিষদ গঠনের দাবি তিন পার্বত্য জেলার বাসিন্দাদের।